Bolpur

WB Municipal Election 2022: শান্তিনিকেতনে প্রচুর পর্যটক আসেন, হোটেলও পর্যাপ্ত, কিন্তু শহরে সুলভ শৌচালয়ের দেখা মেলা ভার

কতটা পরিষেবা দিতে সক্ষম হল বোলপুর পুরসভা? আসন্ন পুর নির্বাচনে কোন দিকগুলোর কথা মাথায় রেখে ভোট দেবেন সাধারণ মানুষ?

Advertisement

ঋষভ মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৮:৫০
Share:

বিশ্বভারতী... —নিজস্ব চিত্র।

রবীন্দ্রনাথের স্নেহধন্য বোলপুর শহরে এ বার নির্বাচনের আগেই শান্তিনিকেতনের বেশ কিছুটা অংশও পুরসভার অন্তর্গত হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই শহরের অন্যান্য জায়গার মতো সেই অংশও উন্নয়নের ছোঁয়া পেতে তৈরি। তবে শহরের কোলাহল, বাজার, আদালত, স্টেশন, বাসস্ট্যান্ডের পাশে শান্ত, পল্লি চেতনাকে বুকে আগলে রাখা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের উন্নয়নের পথ যে এক নয়, তা বুঝতে পারছেন সকলেই। শহরের জল, সড়ক, নিকাশি, নিরাপত্তার বিষয়গুলির উন্নয়ন তো গুরুত্বপূর্ণ বটেই, তবে এ বারের নির্বাচনে বিজয়ী দলের প্রধান চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে বিশ্বভারতীর চরিত্রকে অপরিবর্তিত রেখে আশেপাশের এলাকার সর্বাঙ্গীণ বিকাশ। বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ পার করে আজকে কেমন আছে শহর বোলপুর, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে কিছু সমস্যা চোখে পড়েই।

Advertisement

শহরের কেন্দ্রে দু’টি বড় সড়ক রয়েছে। একটি বোলপুর রেল স্টেশন থেকে জামবুনি বাসস্ট্যান্ড হয়ে শ্রীনিকেতন মোড় থেকে সিউড়ির দিকে চলে যাচ্ছে এবং অন্যটি রেল স্টেশন থেকে শান্তিনিকেতন ক্যাম্পাসের ভিতর দিয়ে গোয়ালপাড়ার দিকে চলে যাচ্ছে। এই রাস্তা দু’টি খুব সংকীর্ণ না হলেও রাস্তার দুই ধারে প্রধান বাজার এলাকা অবস্থিত হওয়ায় বিশেষ বিশেষ সময়ে প্রবল যানজটের মুখে পড়তে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। স্থানীয়দের দাবি, বোলপুর থেকে কাশীপুর এবং শ্যামবাটি থেকে প্রান্তিকের নবিনির্মিত বাইপাস দু’টি যেমন চওড়া এবং ওয়ান ওয়ে বানানো হয়েছে, শহরেও যদি সেই ব্যবস্থা করা যায়, তা হলে যানজটের সম্ভাবনা অনেকটাই কমে। অন্য দিকে স্কুল বাগান, কালিমোহন পল্লি, হাটতলা প্রভৃতি পাড়ার গলিগুলির অপ্রশস্ততার ফলে সকালের মাছ বাজার ও সব্জি বাজারের সময় যে প্রবল যানজটের সৃষ্টি হয়, তারও স্থায়ী সমাধান চাইছেন স্থানীয়রা।

বোলপুর শহরের অধিকাংশ এলাকায় জার্মান প্রকল্পের জলের সুবিধা প্রায় বাড়ি বাড়ি পৌঁছে গেলেও শহরের তুলনামূলক উঁচু জায়গাগুলিতে বেশি ক্ষণ পানীয় জলের সুবিধা পাওয়া যায় না। সারা দিনের জন্য পানীয় জলের চাহিদা এলাকায় দীর্ঘ দিনের। বিশেষ করে যে সব এলাকায় বাসিন্দারা পুরোপুরি পুরসভার জলের উপরেই নির্ভরশীল, সেখানে জল দেওয়ার সময়সীমা বাড়াতেই হবে। এ ছাড়াও নবনির্মিত ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ড যে হেতু আগে পঞ্চায়েতের অধীনে ছিল, এ বার সেখানেও জার্মান প্রকল্পের জল পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব দ্রুত পালন করতে হবে পুরসভাকে।

Advertisement

শহরের নিকাশি ব্যবস্থা মোটের উপর স্বাভাবিক হলেও বর্যাকালে এর অব্যবস্থা প্রকট হয়ে ওঠে। শহরের নিচু এলাকা যেমন দক্ষিণ গুরুপল্লি, উদয়ন পল্লি, ইন্দিরা পল্লি, বাগান পাড়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় বর্ষাকালে হাঁটু সমান জলও জমতে দেখা যায়। অতি বর্ষণে ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় গৃহবন্দি থাকার ঘটনাও ঘটেছে। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান না হলে প্রতি বর্ষাতেই এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে বাধ্য। নতুন ওয়ার্ড দু’টিতেও নিকাশির ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন।

প্রতি বছর শান্তিনিকেতনে প্রচুর পর্যটক আসেন। তাঁদের জন্য পর্যাপ্ত হোটেলও গড়ে উঠেছে শান্তিনিকেতনে। কিন্তু শহরে সুলভ শৌচালয়ের দেখা মেলা ভার। বিশ্বভারতীর দু’টি শৌচালয় এক সময় থাকলেও এখন তা-ও বন্ধ। ফলে সমস্যার মুখে পড়েন আগত পর্যটকেরা। পুরসভার তরফ থেকে সুলভ শৌচালয় নির্মাণ করা হোক, এমনটাই দাবি মানুষের। একই সঙ্গে ভুবনডাঙা, শ্যামবাটি প্রভৃতি এলাকার যে সব পুকুরগুলি কচুরিপানায় ভর্তি হয়ে গিয়েছে, সেগুলি দ্রুত পরিষ্কার করে সেখানকার সৌন্দর্যায়নে নজর দিক পুরসভা, চাইছে এলাকার মানুষ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement