অসহায় বৃদ্ধার বাড়ি মেরেমত করছেন অভাবী গ্রামবাসীরাই । বিষ্ণুপুরের বসন্তপুর । ছবিঃঅভিজিত অধিকারী ।
সরকারি প্রকল্পে বাড়ি মেলেনি। কবে মিলবে তার ঠিকও নেই। বর্ষায় বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মেয়েকে নিয়ে জীর্ণ ঘরে সমস্যার মধ্যে ছিলেন বিষ্ণুপুরের উলিয়াড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বসন্তপুর বাউরিপাড়ার বৃদ্ধা নন্দরানি বাউরি। পড়শিরাই নিজেরা চাঁদা তুলে অ্যাসবেসর্টর কিনে দিলেন। ঘর মেরামতিতেও হাত লাগালেন তাঁরা।
নন্দরানির পড়শি লতিকা বাউরি, সরস্বতী বাউরির মতো গ্রামের অনেকের দাবি, ‘‘আমাদের গ্রামের অনেকেই দুঃস্থ হওয়া সত্ত্বেও সরকারি বাড়ি পাননি। অধিকাংশের মাটির দেওয়াল ও খড়ের ছাউনির ঘর। তবে নন্দরানির অবস্থা আরও খারাপ। রাতবিরেতে বৃষ্টি পড়লেই কাঁথা-বালিশ ভিজে যেত। পড়শিদের বাড়িতে মাথা বাঁচাতে ছুটতেন। গ্রামের মানুষজন তাই নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে তাঁর বাড়ি মেরামত করে দিলেন।’’
শুক্রবার গ্রামের মানুষজন নিজেদের কাজকর্ম ফেলে বৃদ্ধার বাড়ি মেরামতে হাত লাগান। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কয়েকজন কর্মী। সংস্থার কর্মী দিল খান বিষ্ণুপুর থেকে গাড়িতে অ্যাসবেস্টর, সিমেন্টের খুঁটি নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেন।
সব মিলিয়ে বসন্তপুরের বাউরিপাড়ায় যেন উৎসবের আমেজ চলে আসে। এ দিন গ্রামবাসীরা এক জায়গায় খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থাও করেন।
ভাঙা ঘর মেরামত করা দেখে চোখে জল চলে আসে বৃদ্ধা নন্দরানির। তিনি বলেন, “আমি ভেবেছিলাম দেওয়াল চাপা পড়েই হয়তো মরতে হবে। এখন দেখছি, আমার জন্য সারা গ্রাম ছুটে এসেছে। আরও কয়েকটা বছর ভাল ভাবে কাটাতে পারব।’’