saraswati puja

আর দেরি নেই, দিনরাত মূর্তি গড়ছে সাজিনা

রতন পালের ছেলে রণজিৎ উচ্চ মাধ্যমিকের পরে বা গৌরীর মেয়ে, স্নাতক সান্ত্বনা পাল এখন পরিবারের জীবিকার সঙ্গে যুক্ত।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত 

সিউড়ি শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:৩১
Share:

সরস্বতীর প্রতিমা তৈরিেত মগ্ন সাজিনার এক মৃৎশিল্পী। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়

মাঝে মাত্র কয়েকটা দিন। ২৬ জানুয়ারি সরস্বতী পুজো। মৃৎশিল্পীদের ব্যস্ততাও তাই এখন তুঙ্গে। খড় দিয়ে কাঠামো তৈরি করে ছোট বড় দেবীমূর্তি তৈরি হচ্ছে নানা জায়গায়। তবে, সরস্বতী পুজোয় ছাঁচের মূর্তির চাহিদাও তুঙ্গে থাকে। শুক্রবার ছাঁচের তৈরি মূর্তি তৈরির ব্যস্ততা দেখা গেল সিউড়ির সাজিনা গ্রামে পাল পরিবারগুলিতে।

Advertisement

ছাঁচের মূর্তির জন্যই খ্যাত এই সাজিনা গ্রাম। সেখানকার মূর্তি তৈরির করিগরেরা জানাচ্ছেন, ছোট বড় নানা মাপের ও ছাঁচের সরস্বতী মূর্তিগুলিকে বাজারে পৌঁছে দেওয়ার জন্য এখন দিনরাত এক করে কাজ চলছে। হাত লাগিয়েছেন পরিবারের মহিলারাও। এখানে থেকেই ছাঁচের তৈরি মূর্তিগুলি পৌঁছোবে পড়শি গ্রাম, জেলার বিভিন্ন অংশে ও পাশের জেলাতেও।

স্কুল, কলেজ সহ নানা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন ক্লাবে বড় প্রতিমা হয় ঠিকই। তবে, বাংলার বাড়িতে বাড়িতে ছোট ছাঁচে তৈরি সরস্বতী মূর্তির কদর বেশি। পুজোর দু’দিন আগে থেকেই বহরমপুর, কৃষ্ণনগর, কলকাতা-সহ নানা জায়গা থেকে আনা সরস্বতী মূর্তিতে বাজারে ছেয়ে যায়। সেই তালিকায় রয়েছে সাজিনাও। গ্রামের শিল্পীরা বলছেন, দু’বছর কোভিড ব্যবসা মার খেয়েছে। এ বার চাহিদার বাড়বে ভেবে অন্তত হাজার ১২ ছাঁচের প্রতিমা তৈরি হয়েছে। ছয় ইঞ্চি থেকে শুরু করে দুই থেকে তিন ফুট উচ্চতার প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে।

Advertisement

সাজিনায় গিয়ে জানা গেল, গ্রামে মৃৎশিল্পের কদর বাড়াতে মুখ্য ভূমিকা নিয়েছে এক সময় বাংলাদেশ থেকে আসা একটি পরিবার। নির্দিষ্ট করে বললে, ছাঁচের মূর্তি গড়ার কাজ জানা এক দম্পতি। প্রয়াত ওই দম্পতির সন্তান রতন পাল, সুবল পাল, মেয়ে গৌরী পাল, আরতি পাল— প্রায় প্রত্যেকেই ছাঁচের মূর্তি তৈরিকেই জীবিকা করছেন। কাজ করছেন তাঁদের সন্তানেরাও। ওই পরিবারগুলির কাছে কাজ শিখে এখন ছাঁচের মূর্তি গড়ে গ্রামের আরও কয়েকটি পরিবার।

শিল্পীরা জানান, বাংলা নতুন বছরের জন্য গণেশ-লক্ষ্মী, তার পরে বিশ্বকর্মা, লক্ষ্মীর চাহিদা থাকে। তবে সরস্বতী পুজোতেই সবচেয়ে বেশি ব্যস্ততা থাকে। জেলার রামপুরহাট, সিউড়ি, কীর্ণাহার, দুবরাজপুরের পাশাপাশি সাজিনায় তৈরি ছাঁচের তৈরি মূর্তি পৌঁছে যায় আসানসোল, পাণ্ডবেশ্বর ও মুর্শিদাবাদের একটা অংশেও। পাইকারি বিক্রি করার পাশাপাশি নিজেরা খুচরো বিক্রিও করেন গ্রামের মৃৎশিল্পীরা।

রতন পালের ছেলে রণজিৎ উচ্চ মাধ্যমিকের পরে বা গৌরীর মেয়ে, স্নাতক সান্ত্বনা পাল এখন পরিবারের জীবিকার সঙ্গে যুক্ত। কাজ করছেন বাড়ির বধূ রানি পাল, মমতা পাল। তাঁদের কথায়, ‘‘ছাঁচ তৈরি, সেই ছাঁচে মাটি ঢেলে মূর্তি তৈরি করা, শুকোনো, রং করা—সব মিলিয়ে যথেষ্ট খাটনির কাজ। তবে খাটনি অনুয়ায়ী দাম পাওয়া যায় না। আকার ও মান অনুয়ায়ী মূর্তি বাজারে বিক্রি হয় ৩০ টাকা থেকে শুরু করে ৭৫০ টাকা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement