Winter at Birbhum

মেঘ কেটে জাঁকিয়ে শীত কবে, অপেক্ষায় জেলা

বৃহস্পতিবারও তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রির উপরে। তবে, এ দিন থেকে আকাশে মেঘ কিছুটা কাটতে শুরু করেছে। ফলে, কিছুদিনের মধ্যেই নতুন করে তাপমাত্রার পতন হবে বলে শ্রীনিকেতন আবহাওয়া অফিসের খবর।

Advertisement

সৌরভ চক্রবর্তী

সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:০০
Share:

শীত পড়তে না পড়তেই ধুনুরিদের ডাক। —নিজস্ব চিত্র।

ক’দিন আগেও পারা-পতনে বীরভূমের কাছে কয়েক গোল খেয়েছিল শৈলশহর কালিম্পং। দিকে দিকে ধুনুরিদের চাহিদা বেড়েছিল লেপ-কম্বল তৈরির জন্য। শীতপোশাকের বিক্রিতে লেগেছিল ধুম। কিন্তু, হঠাৎ ছন্দপতন! জেলায় বেশ কয়েক দিন ধরেই উধাও সেই জাঁকিয়ে শীতের আমেজ। ডিসেম্বর শেষ হতে চলল। ৯-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে ঘোরাফেরা তাপমাত্রা পৌঁছে গিয়েছে চার থেকে পাঁচ ডিগ্রি বেশিতে। শীতের কাঁপুনিও তেমন অনুভূত হচ্ছে না।

Advertisement

শ্রীনিকেতন আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, আকাশে মেঘ থাকার কারণেই কম হচ্ছে শীতের অনুভূতি। মেঘ কাটলেই শীতের আমেজ ফিরবে। শ্রীনিকেতন আবহাওয়া অফিস সূত্রের খবর, চলতি শীতে এখনও পর্যন্ত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে গত ১৯ ডিসেম্বর। সে দিনের তাপমাত্রা ছিল ৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, তার আগে এক দিন ৯.৮ ডিগ্রি ছিল। ২০ ডিসেম্বর থেকে তাপমাত্রা ক্রমাগত বাড়ছে। এই সময় ১৩ থেকে ১৪ ডিগ্রির সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে তাপমাত্রা।

বৃহস্পতিবারও তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রির উপরে। তবে, এ দিন থেকে আকাশে মেঘ কিছুটা কাটতে শুরু করেছে। ফলে, কিছুদিনের মধ্যেই নতুন করে তাপমাত্রার পতন হবে বলে শ্রীনিকেতন আবহাওয়া অফিসের খবর। জানা গিয়েছে, পশ্চিমী ঝঞ্ঝা এবং বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি হওয়া নিম্নচাপের কারণে উত্তুরে হাওয়া ঢুকতে বাধা পাচ্ছে। এই দুই বাধা কেটে গেলেই আবারও শীত পড়বে।

Advertisement

তবে শীত হঠাৎ কমে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন শীতবস্ত্র বিক্রেতারা। তাঁদের বিপুল পসরার বিক্রি এক ধাক্কায় অনেকটাই কমেছে। শীতের মরসুমের কথা মাথায় রেখে প্রায় সকলেই প্রচুর পরিমাণে সোয়েটার, জ্যাকেট, টুপি মজুত করেছিলেন বিক্রির জন্য। কিন্তু শেষ কয়েক দিনে বিক্রি প্রায় হয়নি বলেই তাঁদের দাবি। সিউড়ি কোর্টবাজার এলাকার বাপ্পা কুণ্ডু, মহম্মদ আলি হোসেনরা বলেন, ‘‘শীতের পোশাক নভেম্বরের শেষ থেকে ফেব্রুয়ারির শুরুর দিক পর্যন্ত বিক্রি হয়। তার মধ্যে প্রায় এক মাসের বেশি সময় কেটেই গেল। আরও কয়েক দিন যদি শীত না পড়ে, তাহলে অর্ধেকের বেশি শীতপোশাক বিক্রি হবে না বলেই আমাদের আশঙ্কা।’’

চিন্তায় রয়েছেন শিউলিরাও। শীত কমতেই কমেছে খেজুর রসের পরিমাণ। বছরের এই সময়টায় খেজুরের রস সংগ্রহ করে সেখান থেকে গুড় তৈরি করে সংসার চলে তাঁদের৷ কিন্তু, জাঁকিয়ে শীত না-পড়ায় সংগৃহীত রসের পরিমাণ অনেকটাই কমে যাচ্ছে। শিউলি জোহাদ শেখ, ইয়াসিন শেখরা বলেন, “শীত যত বাড়ে, খেজুর গাছের রসও তত বাড়ে৷ ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসের কড়া শীতের সময়ে সবচেয়ে ভাল মানের ও পরিমাণের রস পাওয়া যায়। কিন্তু, এ বার সে ভাবে ঠান্ডা না-থাকায় রস কম পাওয়া যাচ্ছে। যা পাচ্ছি, তার মানও খুব ভাল নয়।”

শীতের এমন অকাল নিরুদ্দেশে ভাবনা বাড়ছে আলু চাষিদেরও। এই আবহাওয়ায় চাষের ক্ষতি হতে পারে বলে মনে করছেন চাষিরা। আলু চাষি আনোয়ার শেখ, আশিস বাগদিরা বলে, “আলু চাষের ক্ষেত্রে ঠান্ডা যত বেশি হয়, তত সুবিধা। হঠাৎ করে এত দিন ঠান্ডা কমে যাওয়ায় এবং কুয়াশা বেশি থাকায় চাষেক্ষতি হতে পারে। দ্রুত আবহাওয়ার বদল না-হলে আলু চাষ মার খেতে পারে।” সকলেই এখন তাই দিন গুনছেন, মেঘ কেটে কবে ফের জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়বে জেলায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement