গন্ধেশ্বরী নদী। ছবি: অভিজিৎ সিংহ
নদীবক্ষে সমাবেশ বন্ধ করা ও গন্ধেশ্বরী-দ্বারকেশ্বর সেচ প্রকল্পকে দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি উঠল। শুক্রবার কলকাতায় জলসম্পদ ভবনে রাজ্যের সেচ ও জলসম্পদ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর কাছে এই দাবি লিখিত ভাবে জমা দেন বাঁকুড়া জেলার পরিবেশকর্মীরা। ‘গন্ধেশ্বরী নদী বাঁচাও কমিটি’, ‘পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ’, ‘বাঁকুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’-সহ প্রায় কুড়িটি সংগঠনের তরফে ওই দাবিপত্র দেওয়া হয়েছে।
‘গন্ধেশ্বরী নদী বাঁচাও কমিটি’র সহ-সম্পাদক সন্তোষ ভট্টাচার্য, পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের বাঁকুড়া শাখার সম্পাদক জয়দেব চন্দ্র বলেন, “আমরা নদীর চরে সমাবেশ বন্ধ করা ও গন্ধেশ্বরী-দ্বারকেশ্বর প্রকল্পকে দ্রুত বাস্তবায়িত করার দাবি মন্ত্রীর কাছে জানিয়েছি। মন্ত্রী দাবিগুলি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছেন।”
গত জানুয়ারিতে বাঁকুড়ার লোকপুর লাগোয়া দ্বারকেশ্বরের চরে একটি আশ্রমের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বিতর্ক দানা বাঁধে। শহরের পরিবেশকর্মীদের একাধিক সংগঠন জোট বেঁধে ওই অনুষ্ঠান বন্ধের দাবি তোলেন। জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলাও করা হয় সংগঠনগুলির পক্ষে। যদিও উৎসব বন্ধ করা যায়নি।
এর পরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মিসভার জন্য বেছে নেওয়া হয় সতীঘাট বাইপাস সংলগ্ন গন্ধেশ্বরীর চর লাগোয়া এলাকাকে। যা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন শহরবাসীর একাংশ। মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থল পরিবর্তন করার দাবিতে জেলাশাসকের দফতরে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছিল।
তবে শহরবাসীর একাংশের অভিযোগ, ধর্মীয় সংগঠনের মহোৎসব বন্ধে পরিবেশপ্রেমীরা যে ভাবে আন্দোলনে নেমেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীর সভার ক্ষেত্রে তেমন ভাবে তাঁদের সরব হতে দেখা যায়নি। যদিও সন্তোষবাবুর দাবি, “মুখ্যমন্ত্রীর সভার কয়েকদিন আগেই আমরা জানতে পারি যে সভাস্থল হিসেবে গন্ধেশ্বরীর চরকে বেছে নেওয়া হয়েছে। তাই সে ভাবে আন্দোলন গড়ে তোলার সময় পাওয়া যায়নি। তবে আমরা ওই কর্মসূচির বিরুদ্ধে শহরে পথসভা ও জেলাশাসকের দফতরে স্মারকলিপি দিয়েছিলাম।” আগামী দিনে যাতে নদীর চরে রাজনৈতিক বা ধর্মীয় কোনও ধরনেরই সভা সমাবেশের ছাড়পত্র না দেওয়া হয়, সেই দাবি তুলেছেন তিনি। পাশাপাশি, গন্ধেশ্বরী নদীকে পুনরুজ্জীবিত করতে নদী বক্ষের জলধারণ ক্ষমতা বাড়াতে প্রয়োজন মতো খনন কার্যের দাবিও তুলেছেন তাঁরা। শনিবার শুভেন্দুবাবুকে এ নিয়ে ফোন করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।