RG Kar Hospital Incident

পর্যাপ্ত পুলিশ নেই, কাজ হবে কি নির্দেশিকা এলেও

জেলা পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের আধিকারিক থেকে কনস্টেবল, ভিলেজ পুলিশ, এনভিএফ, হোম গার্ড মিলিয়ে রয়েছেন কমবেশি ৩ হাজার জন।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত 

সিউড়ি শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২৪ ০৯:৩২
Share:

Sourced by the ABP

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার পরেই কলকাতা পুলিশের তরফে পুলিশকর্মীদের উদ্দেশে ১৫ দফা নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়েছে রবিবার। কারণ, প্রথম থেকেই এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত হিসাবে গ্রেফতার করা হয়েছে এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে।

Advertisement

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টরেট থেকে জেলায় তেমন কোনও নির্দেশিকা এ দিন পর্যন্ত পৌঁছয়নি। তবে নির্দেশিকা আসার আগেই বীরভূমের জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে জেলার সরকারি হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে জোর দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, হাসপাতালগুলির সুরক্ষা ব্যবস্থা অডিট করে দিন তিনেকের মধ্যে তার রিপোর্ট তৈরিতে জোর দেওয়া হয়েছে। এই কাজ করবেন জেলা পুলিশের কর্তারাই। রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।

তবে, সত্যি যদি রাজ্য থেকে ওই ১৫ দফার নির্দেশিকা জেলায় এসে পৌঁছয়, সে ক্ষেত্রে পরিকাঠামোর অভাব বিশেষ করে পুলিশকর্মীদের সংখ্যা কম থাকায়, সেই সব নির্দেশ পালন করা সম্ভব কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে জেলা পুলিশের অন্দরেই। অনেকে বলছেন, তখন তো ভরসা সেই সিভিক ভলান্টিয়ারই! জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘নির্দেশিকায় মূল যে বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে, তা হল, মহিলাদের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত পুলিশকর্মী মোতায়েন করতে হবে। কিন্তু, পর্যাপ্ত সংখ্যায় পুলিশকর্মীই তো জেলায় নেই!’’ ওই আধিকারিক জানান, পুলিশের অফিসার থেকে কনস্টেবল, প্রতিটি পর্যায়ে অনেক শূন্যপদ রয়েছে। সেই ঘাটতি মিটবে কী ভাবে?

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, জেলা পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের আধিকারিক থেকে কনস্টেবল, ভিলেজ পুলিশ, এনভিএফ, হোম গার্ড মিলিয়ে রয়েছেন কমবেশি ৩ হাজার জন। প্রায় ৩৭ লক্ষ মানুষের বসবাস যে জেলায়, সেখানে এই সংখ্যা নিতান্তই কম। তা-ও ডেউচা পাঁচামিতে প্রস্তাবিত কয়লা খনির জন্য জমিদাতাদের কয়েকশো জনকে জুনিয়র কনস্টেবল পদে নিয়োগ করায় সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘এখানেও সমস্য়া আছে। জুনিয়র কনস্টেবল পদটি নতুন। তাঁদের দায়িত্ব সীমিত। অনেকে এখনও প্রশিক্ষণ শেষে কাজে যোগ দেননি। অভিজ্ঞতা তো নেই-ই।’’

ফলে ভরসা করতে হচ্ছে সেই সিভিক ভলান্টিয়ারদের উপরেই। কিন্তু, থানার জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ পর্যন্ত, কার্যত সব কাজই সিভিককর্মীদের দিয়ে করাতে গিয়ে বিচ্যুতি ঘটছে বলেও মত পুলিশ আধিকারিকদের একাংশের।

এক পুলিশকর্তা জানান, লালবাজারের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, আরজি কর হাসপাতালের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে
না-হয়, সে জন্য সরকারি হাসপাতাল, সরকারি হোম এবং মহিলা হস্টেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করতে হবে। মহিলাদের নিরাপত্তার জন্য বাড়তি কী কী পদক্ষেপ করা প্রয়োজন, থানা স্তরে তা ঠিক করতে হবে। মহিলা ডাক্তার, কলেজ ছাত্রী এবং স্কুলছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের নিরাপত্তা বিষয় সংক্রান্ত অভাব-অভিযোগ জানতে হবে। ‘‘কিন্তু, সব ক্ষেত্রেই সেই পর্যাপ্ত পুলিশকর্মীর অভাব সামনে আসবে’’—বলছেন ওই পুলিশকর্তা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement