Duare Ration

দুয়ারে রেশন চান জেলার বহু ডিলারই

জেলা খাদ্য ও সরবরাহর দফতরের এক আধিকারিক জানান, ‘দুয়ারে রেশন’ বন্ধ করা সংক্রান্ত কোনও সরকারি নির্দেশ আসেনি। তাই এই নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত না-আসা পর্যন্ত ওই প্রকল্প চলবে।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত 

সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২২ ০৯:২৯
Share:

দুয়ারে রেশন প্রকল্প।

রাজ্য সরকারের ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প ২০১৩-এর জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের পরিপন্থী বলে ইতিমধ্যেই রায় দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। ওই রায়ে খুশি হয়েছেন রেশন ডিলারদের একাংশ। কিন্তু, বীরভূমের রেশন ডিলারদের সংগঠন ‘দুয়ারে রেশন’ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে।

Advertisement

কী যুক্তি সংগঠনের? তাদের দাবি, ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্পে গ্রাহকেরা নিজেদের দোরগোড়ায় রেশন সামগ্রী পেতেন। পাশাপাশি কমিশন ভিত্তিক ব্যবসা হওয়ায় অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হচ্ছিলেন রেশন ডিলারেরা। ওয়েস্ট বেঙ্গল এমআর ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের বীরভূম জেলা সম্পাদক অলোক ঠাকুর বলছেন, ‘‘জেলার মোট ৯৬৪ জন রেশন ডিলার আমাদের সংগঠনের ছাতার তলায় রয়েছেন। আমরা সকলেই এই প্রকল্পের পক্ষে। আর সত্যিই যদি বন্ধ হয় এই প্রকল্প, তাহলে গ্রাহকদের সঙ্গে আর্থিক ক্ষতি হবে আমাদেরও।’’

জেলা খাদ্য ও সরবরাহর দফতরের এক আধিকারিক জানান, ‘দুয়ারে রেশন’ বন্ধ করা সংক্রান্ত কোনও সরকারি নির্দেশ আসেনি। তাই এই নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত না-আসা পর্যন্ত ওই প্রকল্প চলবে। রাজ্য সরকার ওই রায়ের প্রেক্ষিতে ‘উচ্চতর জায়গায়’ আবেদনের ইঙ্গিত দিলেও সেটা এখনও হয়নি।

Advertisement

গত বিধানসভা ভোটে বিপুল জয়ের পরে ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প নিয়ে এসেছিল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা ছিল, এখন থেকে প্রতি বাড়িতে গিয়ে রেশন সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হবে। কিন্তু রেশন ডিলারদের একটি বড় অংশ প্রথম থেকেই প্রপকল্পের বিরোধিতা করে এসেছেন। কারণ, প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে কার্যত হিমশিম খাচ্ছিলেন বহু রেশন ডিলার। বেঁকে বসেছিলেন বীরভূমের রেশন ডিলাররাও। তাঁদের দাবি, জেলা জুড়ে কমপক্ষে দশ লক্ষ বাড়িতে রেশন সামগ্রী পৌঁছে দিতে খরচের বোঝা বেড়ে গিয়েছিল অনেকটাই।

তাহলে এখন কেন মত বদল?

জানা গিয়েছে, রেশন ডিলারদের অসন্তোষ কমানোর জন্য বা সমস্যা মেটাতে তাঁদের সুবিধা কিছুটা বাড়ায় রাজ্য সরকার। প্রকল্প রাপায়িত করতে প্রতি কুইন্টালে ৭৫ টাকা অতিরিক্ত কমিশন দেওয়ার কথা বলা হয়। প্রতি মাসে প্রায় ২১ হাজার রেশন ডিলারকে পাঁচ হাজার টাকা করে কমিশন দেওয়ার ব্যবস্থাও করে রাজ্য সরকার। জোড়া সিদ্ধান্তে আয় বেড়ে গিয়েছে ডিলারদের। সেই আয় হাতছাড়া হোক, চাইছেন না সংগঠনের ছাতার তলায় থাকা জেলার রেশন ডিলারদের বড় অংশ।

ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের নেতা তথা রামপুরহাট ২ ব্লকের প্রতাপপুরের রেশন ডিলার মেহবুব আলম বলেন, ‘‘মাসে ১৬ দিন দুয়ারে দুয়ারে রেশন দিতে অসুবিধা নেই। কিন্তু, প্রকল্প পুরো বন্ধ হলে অতিরিক্ত কমিশন ও মাসে পাঁচ হাজার টাকা আয়ের পথও বন্ধ হয়ে যাবে। তখন অসংখ্য ডিলার অসুবিধায় পড়বেন। বিশেষ করে যাঁরা এমআর ডিলারশিপ ছাড়া অন্য কোনও ভাবে আয় করেন না, তাঁরা বিপদে পড়বেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement