ঝালদা পুরসভা চত্বরে। নিজস্ব চিত্র।
জেলা নেতৃত্বকে চিঠি দেওয়ার ঘটনায় ইঙ্গিত মিলেছিল। মঙ্গলবার পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভা চত্বরে পুর-প্রশাসকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে ঝালদা শহর তৃণমূলের ‘বিভাজন’ আরও স্পষ্ট হল বলে মত জেলার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের।
এ দিন ‘ঝালদা শহর নাগরিক মঞ্চ’-এর ব্যানারে পুর-প্রশাসক সুরেশ আগরওয়ালের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভে শামিল হন পুরসভার মহিলাকর্মীরা। পুরোভাগে নেতৃত্ব দিতে দেখা গিয়েছে প্রাক্তন পুর-প্রশাসক তথা পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের সম্পাদক প্রদীপ কর্মকার, দলের ঝালদা শহর সভাপতি দেবাশিস সেন, যুব সভাপতি রাজেশ রায়-সহ শহর তৃণমূলের একাধিক নেতাকে।
বিক্ষোভের শুরুতে সুরেশবাবুর বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দিতে বিক্ষোভকারীরা অফিসে ঢুকতে চাইলে, তাঁদের পথ আটকায় পুলিশ। সুরেশবাবুর অনুপস্থিতিতে পাঁচ দফা দাবি সংবলিত স্মারকলিপি তুলে দেওয়া হয় প্রশাসকমণ্ডলীর দুই সদস্যের হাতে। সেখানে সুরেশবাবুর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দেন প্রদীপবাবু থেকে শুরু করে অন্য নেতারা। প্রদীপবাবুর অভিযোগ, ‘‘পুরসভায় অরাজকতা শুরু হয়েছে। অস্থায়ী পুরকর্মীদের মাইনে আটকে রাখা হয়েছে। কর্মী ছাঁটাই করা হচ্ছে। পেনশনভোগীরা পেনশন পাচ্ছেন না। মানুষ তার প্রতিবাদ জানাতে এসেছেন।’’
যদিও পুর-প্রশাসকের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘প্রাক্তন পুর-প্রশাসক বিধি-বহির্ভূত ভাবে কিছু কর্মী নিয়োগ করেছেন। যার কোনও অনুমোদন নেই। তাই ওই কর্মীদের মাইনে দেওয়া যাচ্ছে না।’’ পেনশনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘পেনশনের তহবিলে পর্যাপ্ত টাকা নেই। সমস্যার কথা রাজ্য পুর-দফতরে জানানো হয়েছে। কিছু মানুষজন ইচ্ছা করে বিষয়গুলি নিয়ে জলঘোলা করার চেষ্টা করছেন।’’
তবে প্রদীপবাবুর দাবি, নিয়োগ হয়েছে বিধি মেনেই। না হলে এত দিন ওই কর্মীরা মাইনে পেলেন কী করে, সে প্রশ্নও তোলেন তিনি।
এর আগে গত শনিবার শহর তৃণমূলের ছয় নেতা সুরেশ আগরওয়ালের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ তুলে জেলা নেতৃত্বকে চিঠি দেন। তার পরে, গত সোমবার রাতে সুরেশবাবুর অনুগামী বলে পরিচিত কিছু জনের সই করা পাল্টা একটা চিঠি জমা পড়ে দলের জেলা নেতৃত্বের কাছে। সূত্রের খবর, সেখানে সই রয়েছে দলের কয়েকজন বিদায়ী কাউন্সিলর-সহ একাধিক তৃণমূল নেতা-কর্মীর। পুরো ঘটনা-প্রবাহ নিয়ে পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র নবেন্দু মাহালির প্রতিক্রিয়া, ‘‘বিষয়টি জেলা নেতৃত্বের নজরে রয়েছে। আশা করছি, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানো যাবে।’’