ধৃত দুষ্কৃতীরা। — নিজস্ব চিত্র।
নিজেদের সাদা পোশাকের পুলিশ বলে দাবি করে যাত্রীদের থেকে গয়নাগাটি লুট করতেন ভিন্ রাজ্যের দুই যুবক। বুধবার রুটিন তল্লাশি চালাতে গিয়ে একটি হোটেল থেকে সেই চক্রকে ধরল পুরুলিয়া পুলিশ। বৃহস্পতিবার এ নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন পুরুলিয়া জেলার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, ওই চক্রে মোট ৫ জন ছিল। তাঁরা সকলেই ভিন্ রাজ্যের বাসিন্দা বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
পুরুলিয়া জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার পুরুলিয়ার শহরের বিভিন্ন হোটেলে রুটিন তল্লাশি চলছিল। সেই সময় একটি হোটেল থেকে আটক করা হয় আলি রেজা এবং তানভির হোসেন নামে দুই যুবককে। তাঁদের কথাবার্তায় অসঙ্গতি পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা পুলিশ। ধৃতদের আরও জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, তাঁরা মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা। ওই চক্রটিতে কাশেম, সাদিক এবং তকদির নামে ছিলেন আরও তিন জন। এঁদের মধ্যে এক মাত্র কাশেম মহারাষ্ট্রের পুণের বাসিন্দা। তবে ওই চক্রের বাকি ৩ জন পলাতক।
পুলিশের দাবি, ধৃতরা পুরুলিয়া বাঁকুড়া, দুর্গাপুর, বোকারো ইত্যাদি জায়গায় শহরে ঢোকার মুখে নিজেদের সাদা পোশাকের পুলিশ বলে পরিচয় দিয়ে ‘নাকা তল্লাশি’ করত। পুলিশের দাবি, ধৃতেরা শহরগামী পথচারীদের ভয় দেখিয়ে তাঁদের গয়না সরিয়ে নিতেন। কেমন ভাবে ওই চক্রটি লুটপাট করত তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘ওই দুষ্কৃতীরা যাত্রীদের বলত, ‘সামনে ছিনতাই হয়ে যেতে পারে। আপনি কেন এত অলঙ্কার পরে আছেন? খুলে ব্যাগে রেখে দিন।’ পথচারীরা তা খুলে ব্যাগে রাখলে ওই দুষ্কৃতীরা তাঁদের চোখে ধুলো দিয়ে হাতিয়ে নিতেন সেই গয়না।’’ আবার কখনও তাঁরা গয়না ছিনতাই করতেন বলেও অভিযোগ।
পুলিশের দাবি, ওই চক্রের মূল পাণ্ডা লুটপাটের জন্য জায়গা ঠিক করলে সেখানে তাঁকে পৌঁছে দিত ধৃতরা। ধৃতরা জাল নোটের কারবারের সঙ্গেও যুক্ত থাকতে পারেন বলে প্রাথমিক অনুমান পুলিশের। কারণ, তাঁদের থেকে কয়েকটি সন্দেহজনক নোট মিলেছে। যা প্রাথমিক ভাবে জাল বলে মনে করছে পুলিশ। ওই চক্রের বাকি ৩ জনকে জামশেদপুরের দিকে যেতে দেখা গিয়েছে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। বিষয়টি জামশেদপুর পুলিশকেও জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন অভিজিৎ।