প্রতীকী চিত্র
উন্নয়নের প্রশ্নে এ বার শাসকদলের পাশাপাশি, বিরোধী পক্ষের জন প্রতিনিধিদেরও বক্তব্য শুনতে চাইছে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন।
আগামী ১৭ জানুয়ারি ‘উন্নয়ন বৈঠক’ করার কথা জেলা প্রশাসনের। বৈঠকে তৃণমূলের নিয়ন্ত্রণে থাকা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরা ছাড়া, বিজেপি এবং কংগ্রেসের দখলে থাকা বাঘমুণ্ডি, রঘুনাথপুর ২ এবং বরাবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদেরও ডাকা হবে।
গত ২০ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে পর্যালোচনা বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পানীয় জল সরবরাহ জল সংরক্ষণ ও ক্ষুদ্রসেচের উপরে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দেন তিনি। এ ছাড়া, উন্নয়নের গতি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর পর্যালোচনা বৈঠকের পরে, প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছে প্রশাসনের একাংশ। কারণ, গত প্রায় তিন বছরে জেলা প্রশাসনের ডাকা উন্নয়ন বৈঠকে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের ডাকা হয়নি। তার আগে অবশ্য জেলার সবকটি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের ওই বৈঠকে ডাকা হত। বছর তিনেক আগে সেই ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়ে।
জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘আগামী ১৭ জানুয়ারি বৈঠক হবে। জেলার সমস্ত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের বৈঠকে ডাকা হচ্ছে। তাঁরা ছাড়া, বৈঠকে থাকবেন জেলা পরিষদের সব কর্মাধ্যক্ষ।’’
ওই বৈঠকে হাজির থাকবেন জেলা সভাধিপতি তথা তৃণমূলের বরিষ্ঠ জেলা সহ-সভাপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এটা উন্নয়নের প্রশ্নে বৈঠক। তাই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরাও বৈঠকে থাকবেন।’’ উন্নয়ন পরিকল্পনায় বিরোধী দলের নিয়ন্ত্রণে থাকা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদেরও জায়গা করে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে কংগ্রেস, বিজেপি এবং সিপিএম।
বরাবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কংগ্রেস নেতা রামজীবন মাহাতো বলেন, ‘‘এ ধরনের বৈঠকে বহু দিন আমরা ডাক পাইনি। ডাক পেলে অবশ্যই যাব। আমাদেরও কিছু বলার বা প্রস্তাব দেওয়ার থাকতে পারে।’’ বিজেপির সমর্থনে বরাবাজার পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড চালাচ্ছে কংগ্রেস।
বিজেপির জেলা স্তরের নেতারা অবশ্য প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। দলের জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে সরকার তথা তৃণমূলের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ তবে তিনি এ-ও বলেন, ‘‘সত্যিই যদি উন্নয়ন পরিকল্পনায় বিরোধীদের সামিল করতে চায় প্রশাসন, তা অবশ্যই ভাল।’’
সিপিএম জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায়ের বক্তব্য, ‘‘বিরোধীদের মর্যাদা দিয়ে যদি বৈঠক ডাকা হয়, তবে তাকে স্বাগত জানাব। কিন্তু অভিজ্ঞতা ভিন্ন কথা বলছে। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, বিধানসভা বিরোধীদের জন্য। পরবর্তী সময়ে দেখেছি, সেখানে বিরোধীদের পরিসর নেই।’’