রাতেও চলে অবস্থান। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তের বক্তৃতা দিনভর বিক্ষোভ চলল বিশ্বভারতীতে। দুপুরে যে বিক্ষোভের সূচনা হয়, তা চলে রাত অবধি। আটকে থাকেন সাংসদ, বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীও।
বেলা ১টা ৩০ মিনিট
বক্তৃতার কথা ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর পরিকল্পনা করেছিল একাধিক ছাত্র সংগঠন। এ দিন ‘বিশ্বভারতী ছাত্র ঐক্যে’র নামে শতাধিক পড়ুয়া বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় দফতরের সামনে থেকে মিছিল করে লিপিকা প্রেক্ষাগৃহে যান। সেখানেই বক্তৃতা হওয়ার কথা ছিল। তাঁদের হাতে ছিল গিটার, গলায় স্লোগান, রবীন্দ্রসঙ্গীতও। ‘‘এ বার তোর মরা গাঙে বান এসেছে’’, গাইতে গাইতে লিপিকা প্রেক্ষাগৃহের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। বিক্ষোভস্থল থেকে ওঠে ‘আজাদি’ স্লোগানও।
বেলা ৩টে
পড়ুয়াদের অভিযোগ, একাধিক নম্বর থেকে তাঁদের ফোন করে জানানো হয় বক্তৃতাস্থল বদলানো হয়েছে। তাঁদের দাবি, আন্দোলনের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াতেই এমন করা হয়। তবে তাঁরা বিক্ষোভ চালিয়ে যান।
বেলা ৩টে ৪৫ মিনিট
পড়ুয়ারা খবর পান শ্রীনিকেতনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সোশ্যাল ওয়ার্ক’ বিভােগ বক্তৃতা শুরু হয়ে গিয়েছে। কিছু পড়ুয়া আগে গিয়ে তা দেখে আসেন। তাঁেদর কাছ থেকে খবর পেয়ে বাকিরাও সেখানে গিয়ে হাজির হন।
বেলা ৩টে ৫০ মিনিট
শ্রীনিকেতনের পথে বিক্ষোভকারীরা একটি কনভয় আসতে দেখেন। তাকেই স্বপন দাশগুপ্তের কনভয় ভেবে বিক্ষোভকারীরা তা আটকে দেন। তবে ওই কনভয়ে ছিলেন জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু।
বেলা ৪টে ১৫ মিনিট
বিক্ষোভকারীরা সোশ্যাল ওয়ার্ক বিভাগে পৌঁছে দেখেন বাইরে পাঁচিলের গেেট তালা। কয়েকজন গ্রিলের গেল ডিঙিয়ে ভিতরে ঢুকে ইট দিয়ে তালা ভাঙেন। তারপর বাকিরা ঢুকে পড়েন।
বেলা ৪টে ৩০ মিনিট
ভিতরে তখন বক্তৃতাসভা চলছে। বাইরে থেকে বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিতে থাকেন ‘উপাচার্য গো ব্যাক’, ‘স্বপন দাশগুপ্ত গো ব্যাক’। যে ঘরে বক্তৃতা চলছিল তার জানালার কাছে গিয়েও স্লোগান দেওয়া হয়। ভবনের দুটি গেটই অবরুদ্ধ করে রাখেন বিক্ষোভকারীরা। বেলা সাড়ে ৫টা নাগাদ বক্তৃতা শেষ করে বাইরে আসেন স্বপন দাশগুপ্ত। কিন্তু গেটের কাছেই তিনি প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়েন। রাত ৯টা অবধি বিক্ষোভ চলতে থাকে।
রাত ৯টা ১৫ মিনিট
ছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা জানিয়ে বিক্ষোভরত পড়ুয়ারা ফিরে যান। তাঁদের কথায়, ‘‘লুকিয়ে লুকিয়ে এই বক্তৃতা করানোই প্রমাণ করে আন্দোলনে আমাদের নৈতিক জয় হয়েছে। আমরা আমাদের দাবি নিয়ে পরেও উপাচার্যের কাছে যাব।’’
রাত ১০টা ৩৫ মিনিট
পড়ুয়ারা চলে যাওয়ার পর বেরোন সকলে। স্বপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘বাইরে নিরাপত্তার অভাব ছিল। তাই আমরা বেরোইনি।’’