Water crisis

জল চেয়ে বিক্ষোভ চলছেই

সকাল ১০টা থেকে শহরের ১৮ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা স্থানীয় দেবীমেলা এলাকায় অবরোধ শুরু করেন। ওই দু’টি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের একাংশ এলাকার একটি পুকুর দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া, শালতোড়া শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:১৭
Share:

কাশীপুর-আদ্রা সড়ক অবরোধ করে বসে মানুষজন। নিজস্ব চিত্র

গরম বাড়তেই জলের দাবিতে বিক্ষোভ-অবরোধ নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়েছে দাঁড়িয়েছে। শুক্রবারও জলের দাবিতে পুরুলিয়া শহরের পুরুলিয়া-বাঁকুড়া (৬০এ) জাতীয় সড়ক ও অন্য দিকে কাশীপুর পঞ্চায়েতের কাশীপুর-আদ্রা সড়ক অবরোধ করে চলল বিক্ষোভ।

Advertisement

পানীয় জল ও পুকুর সংস্কারের দাবিতে এ দিন পুরুলিয়া শহরের রেণি রোড এলাকায় অবরোধ করেন এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ। সকাল ১০টা থেকে শহরের ১৮ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা স্থানীয় দেবীমেলা এলাকায় অবরোধ শুরু করেন। ওই দু’টি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের একাংশ এলাকার একটি পুকুর দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করেন। তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন পুকুরটি সংস্কার না হওয়ায় জল তলানিতে ঠেকেছে। ঘোলা জলে বাধ্য হয়ে স্নান সারতে হচ্ছে। এলাকার পুর-প্রতিনিধিকে বলেও সুরাহা হয়নি।

অবরোধকারী মহিলাদের আরও অভিযোগ, এলাকায় পানীয় জলের অভাব রয়েছে। তীব্র দাবদাহে এলাকায় পানীয় জলে টান পড়েছে। পাশাপাশি, স্নান-সহ গৃহস্থালির কাজে যে পুকুরটি তাঁদের ভরসা, সেটিরও জলও তলানিতে ঠেকেছে। গত ভোটের আগে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হলেও ভোগান্তি মেটেনি। এলাকার বাসিন্দা অঞ্জু রাজোয়াড়, লক্ষ্মী রাজোয়াড়দের প্রশ্ন, “এই গরমে এক বালতি জল সংগ্রহ করতে কতটা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, বলে বোঝানো যাবে না। কেন এলাকায় পানীয় জলের সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।” অবরোধকারীরা পুর-প্রতিনিধিকে ঘটনাস্থলে আসতে হবে দাবি করলেও তিনি অবশ্য সেখানে যাননি। পুলিশ বুঝিয়ে আধ ঘণ্টা পরে অবরোধ তোলে। এলাকার পুর-প্রতিনিধি রবিশঙ্কর দাসের দাবি, “এ সময়ে প্রতি বার শহরের কিছু এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা দেখা দেয়। আরও কয়েকটি এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা ছিল। তা মেটানো হয়েছে। মঙ্গলবার এলাকার বাসিন্দাদের পুরসভায় আসতে বলা হয়েছে।” পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালি বলেন, “যে পুকুরটির কথা বলা হচ্ছে, তা ব্যক্তি মালিকানাধীন। সংস্কারে কী করা যায়, দেখা হচ্ছে।”

Advertisement

এ দিকে, এ দিন সকাল ১০টা থেকে কাশীপুরের রঙ্গিলাডি গ্রামে কাশীপুর-আদ্রা সড়ক অবরোধ করেন স্থানীয় মানুষজন। হাঁড়ি-কলসি নিয়ে রাস্তায় বসে পড়েন মহিলারা। অবরোধকারীদের অভিযোগ, গ্রামে প্রায় শ’পাঁচেক পরিবারের বাস রয়েছে। তবে পানীয় জলের সমস্যা লেগেই থাকে। আরতি দাস, অঙ্গুরা দাস, সুচিত্রা সহিসদের দাবি, গ্রামের পানীয় জলের কলগুলিতে সরু ধারায় জল পড়ে। দূরে হাটতলা মোড় থেকে জল আনতে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। এক বাসিন্দা মিহির বাউরির কথায়, “বেশ কিছু দিন আগে কিছু বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে কলগুলি থেকেও জল পড়ে না।”

কারীরা ঘটনাস্থলে কোনও প্রশাসনিক আধিকারিককে আসার দাবি জানাতে থাকেন। পরে কাশীপুর ব্লকের জয়েন্ট বিডিও দীপক চট্টোপাধ্যায় সেখানে গিয়ে সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিলে প্রায় সওয়া দু’ঘণ্টা পরে অবরোধ ওঠে। কাশীপুরের বিডিও সুপ্রিম দাস বলেন, “জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের নলবাহিত পানীয় জল নিয়ে গ্রামবাসীর অভিযোগ রয়েছে। দফতরকে চিঠি লিখে দ্রুত সমস্যার সমাধান করতে বলা হবে। তত দিন ট্যাঙ্কারের মাধ্যমে জল পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”

জলের দাবিতে এ দিন পথ অবরোধ হয়েছে বাঁকুড়ার শালতোড়ার পাবড়া মোড়েও। সকাল থেকে টানা কয়েক ঘণ্টা অবরোধের জেরে শালতোড়া- মেজিয়া সড়ক অবরুদ্ধধ হয়ে পড়ে। অবরোধকারীদের দাবি, এলাকায় এখনও নলবাহিত পানীয় জলের লাইন বসেনি। এক কিলোমিটার দূর থেকে জল আনতে হয়। সেখানেও এখন জল কম দেওয়া হচ্ছে। অবিলম্বে গ্রামে জলের ব্যবস্থা করা হোক। শালতোড়ার বিডিও মানসকুমার গিরি-সহ পুলিশ ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আধিকারিকেরা এলাকায় গিয়ে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement