ক্ষোভ: বিতর্কিত হোর্ডিংয়ের প্রতিবাদে মিছিল। নিজস্ব চিত্র
বিশ্বভারতীতে অমিত শাহের সফর ঘিরে প্রথম থেকেই বিরোধিতায় মুখর হয়েছিল ছাত্র-ছাত্রীদের একাংশ। অমিত শাহকে যেন স্বাগত না জানানো হয় সেই দাবিতে বিশ্বভারতী ছাত্র-ছাত্রী ঐক্য মঞ্চের তরফ থেকে একটি আবেদনপত্রও জমা দেওয়া হয়েছিল উপাচার্যের কাছে। তবে যে বিরোধিতা আবেদন-নিবেদনের পর্যায়ে সীমাবদ্ধ ছিল, শুক্রবার হোর্ডিং-কাণ্ডের পরে তা নেমে এল রাস্তায়।
রবীন্দ্রনাথের ছবির উপরে অমিত শাহের ছবি ও নীচে অনুপম হাজরার ছবি দেওয়া হোর্ডিং নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই বিজেপির তরফ থেকে তড়িঘড়ি ফ্লেক্স সরানোর কাজ শুরু হয়ে যায়। তবুও তাতে যে ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি, তা বোঝা গেল শুক্রবার বিকেলেই। এ দিন বিশ্বভারতীর বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী বৃন্দের ব্যানারে ফ্লেক্সের বিরোধিতা করে একটি প্রতিবাদ মিছিল আয়োজিত হয়। মিছিলের পুরোভাগে ছিলেন বীরভূম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি প্রলয় নায়েক। মিছিলটি আগাগোড়াই স্বতঃস্ফূর্ত ও অরাজনৈতিক বলেই দাবি তাঁর।
প্রায় ৩০০ মানুষের এই মিছিলে স্লোগানের পাশাপাশি শোনা গেল রবীন্দ্রসঙ্গীতও। শান্তিনিকেতন ক্লাব মোড় থেকে বোলপুর লজ মোড় পর্যন্ত এই মিছিলে পা মেলান বিশ্বভারতীর বর্তমান ও প্রাক্তন পড়ুয়া এবং আশ্রমিকদের একাংশ। প্রতিবাদীদের অভিযোগ, রবীন্দ্রনাথের গরিমা ও আদর্শকে ভূলুণ্ঠিত করেছে বিজেপি। প্রলয় নায়েক বলেন, ‘‘এই হোর্ডিংয়ের মাধ্যমে বিজেপির চরিত্র বোঝা গেল। কবিগুরুর সম্মান ও আদর্শকে নিয়ে ছেলেখেলা করার প্রতিবাদেই এই মিছিল। ভবিষ্যতে বিজেপির এই অভব্যতার বিরুদ্ধে আমরা প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলনেও যাব।’’ বিজেপি নেতা অনুপম হাজরার দাবি, “ওরা নিজেরা ফ্লেক্স লাগিয়ে নিজেরাই মিছিল করছে। চোরের মায়ের বড় গলা।’’
ছাত্র সংগঠন ডিএসও-এর পক্ষ থেকেও এ দিন অমিত শাহের বিশ্বভারতী আসার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে আবেদনপত্র জমা দেওয়া হয় উপাচার্যের কাছে। এই মর্মে এদিন কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন এলাকায় পোস্টারও দেয় তারা। অমিত শাহের বিশ্বভারতী সফরের প্রতিবাদে শনিবার উপাসনা মন্দিরের সামনে একটি জমায়েতেরও ডাক দেওয়া হয়েছে পড়ুয়াদের একাংশের তরফে। বিশ্বভারতী ক্যাম্পাস সংলগ্ন এলাকায় বিজেপির পতাকা লাগানোরও বিরোধিতা করেন তারা।