পুরুলিয়া সৈনিক স্কুলের বাইরে রবিবার সন্ধ্যায়। ছবি: সুজিত মাহাতো।
অন্যের জীবন বাঁচাতে আগুনের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রাণ হারানো পড়ুয়াকে শ্রদ্ধা জানালেন পুরুলিয়া সৈনিক স্কুলের প্রাক্তনীরা। টানা ১২ দিন মৃত্যুর সঙ্গে কার্যত লড়াইয়ের পরে রবিবার দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে পুরুলিয়া সৈনিক স্কুলের দশম শ্রেণির পড়ুয়া অমিত রাজের।
খবর এসে পৌঁছনোর পরে প্রাক্তনীদের তরফে এ দিন পুরুলিয়া-বোকারো জাতীয় সড়কের পাশে থাকা স্কুলের গেটে অমিতকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। স্কুলের অনেক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী অমিতের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে, মোমবাতি জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
প্রাক্তনীদের তরফে অরিন্দম গিরি ও অমরকান্ত লিলহা জানান, কোভিডের কারণে বেশ কয়েক মাস ধরে বাড়িতে ছিল বিহারের নালন্দা জেলার রাহুই থানার পেশোয়ার গ্রামের অমিত। তাঁদের কথায়, ‘‘যেটুকু জানতে পেরেছি, গত ৩ ডিসেম্বর অমিতের এক পড়শির বাড়িতে আগুন লাগে। বাড়ির ভেতরে তিনটি ছেলে ছিল। এক জন বেরিয়ে এলেও আটকে পড়ে দু’জন। অমিত ভেতরে ঢুকে ছেলেগুলিকে উদ্ধার করে। ওর শরীরের অনেকটা পুড়ে গিয়েছিল।’’ সে দিনই অমিতকে নালন্দার একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তবে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পরে পটনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাকে স্থানান্তরিত করা হয় বলে জানান তাঁরা।
পরে ‘হোয়াটস অ্যাপ’ গ্রুপ মারফত অমিতের খবর প্রাক্তনীদের কাছে পৌঁছলে গত ৯ ডিসেম্বর ভারতীয় বায়ুসেনার এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে অমিতকে পটনা থেকে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানান অমিতবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘দেশের সব সৈনিক স্কুলের প্রাক্তনীরাই চেষ্টা করেছিলেন ওকে বাঁচাতে। কিন্তু এ দিন সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে অমিত চলে গেল।’’
পুরুলিয়ায় স্কুল ক্যাম্পাসে চিত্তরঞ্জন ছাত্রাবাসে থাকত অমিত। ওই ছাত্রাবাসের এক আবাসিকের কথায়, ‘‘আমাদের খুব ভালবাসত অমিতদা। ওঁর মুখটা চোখে ভাসছে।’’