—নিজস্ব চিত্র।
উপাচার্য পদে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর মেয়াদ শেষ হতেই খুশির আমেজ বিশ্বভারতীতে। সেন্ট্রাল অফিসের সামনে মিষ্টিমুখ করতে দেখা গিয়েছে অধ্যাপক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীদের একাংশকে। এরই সঙ্গে প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুতের কুশপুতুল দাহ করলেন বোলপুরের ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যেরা এবং স্থানীয় কিছু মানুষজন।
ফলক-বিতর্কের মধ্যেই বিশ্বভারতীর উপাচার্য পদে মেয়াদ শেষ হয়েছে বিদ্যুতের। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, নিয়ম মেনে আপাতত উপাচার্য পদের দায়িত্ব সামলাবেন কলাভবনের অধ্যক্ষ সঞ্জয় মল্লিক। বিশ্বভারতীর সব ক’টি ভবনের অধ্যক্ষদের মধ্যে সঞ্জয়ই সব চেয়ে প্রবীণ বলে এই দায়িত্ব পেয়েছেন। বুধবার এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই শান্তিনিকেতনের কবিগুরু মার্কেট থেকে সেন্ট্রাল অফিস পর্যন্ত বিদ্যুতের কুশপুতুল নিয়ে মিছিল বার করে ব্যবসায়ী সমিতি। সেই মিছিল শেষে দাহ করা হয় সেই কুশপুতুল। ‘বলো হরি, হরিবোল’ স্লোগানও ওঠে ওই মিছিলে। ব্যবসায়ী সমিতির এক সদস্য বলেন, ‘‘পাঁচ বছর ধরে আমাদের জ্বালিয়ে খেয়েছেন। তাই যখন শুনলাম, উনি চলে যাচ্ছেন, আমাদের আনন্দ হচ্ছে। এটা বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর কার্যকালের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতীকী প্রতিবাদ।’’
২০১৮ সালে বিশ্বভারতীর উপাচার্য হওয়ার পর থেকে নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন বিদ্যুৎ। কখনও বিদ্যুৎ বিধানসভা ভোটে বিজেপির পরাজয় নিয়ে সেমিনারের আয়োজন করে সমালোচনার মুখে পড়েছেন। কখনও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন, তো কখনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছেন। পাল্টা মুখ্যমন্ত্রীও তাঁকে কটাক্ষ করেছেন। সেই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন ফলক-বিতর্ক।
শান্তিনিকেতন ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যক্ষেত্রের স্বীকৃতি পেয়েছে। সেই উপলক্ষে বিশ্বভারতী যে ফলক বসিয়েছে, তাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নাম থাকলেও রবীন্দ্রনাথের নাম নেই। তা নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে শান্তিনিকেতনে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছে তৃণমূল। সেই মঞ্চ থেকেই বিদ্যুতের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে দেখা গিয়েছে তৃণমূল নেতাদের। কিছু দিন শাসকদলের এক নেতাই বিদ্যুৎ সম্পর্কে বলতে গিয়েছে ‘বলো হরি, হরিবোল’ করেছিলেন। বিদ্যুতের বিদায়বেলায় আবারও সেই স্লোগান উঠল। যদিও এর সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই বলেই দাবি শাসকদলের।