আনা হচ্ছে ধৃতকে। নিজস্ব চিত্র
পালিয়েও শেষ রক্ষা হল না। কলেজ পড়ুয়াদের সাহায্যে দু’ঘণ্টার মধ্যে ধরা পড়ল আদালত থেকে পলাতক অভিযুক্ত। বুধবার দুপুরে তা নিয়েই হুলস্থুল কাণ্ড বাধল সিউড়ি জেলা আদালতে। পুলিশ জানিয়েছে, পালিয়ে যাওয়ার জন্য ওই অভিযুক্তর বিরুদ্ধে পৃথকভাবে মামলা করা হচ্ছে। তবে পুলিশি নিরাপত্তার হাত ফস্কে কীভাবে ওই অভিযুক্ত পালিয়ে গেল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত যুবকের নাম সজল চক্রবর্তী। তিনি সিউড়ি থানা এলাকার হাটজনবাজারের বাসিন্দা। মাদকজাত দ্রব্য বিক্রি করা ও নেশা করার অপরাধে মঙ্গলবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করে সিউড়ি থানার পুলিশ। বুধবার বেলা ১২টা নাগাদ তাঁকে আদালতে হাজিরার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই ঘটে বিপত্তি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সময়ে ১৫ জন পুলিশ কর্মী মাদক আইনের ধারায় অভিযুক্ত সজল চক্রবর্তী-সহ ৭০ জনেরও বেশি বন্দিকে নিয়ে সিউড়ি আদালতে হাজির হন। সেই সময় আদালত চত্বরে ভিড় করে ছিলেন ধৃতদের পরিবারের সদস্যরা। অন্য দিনের মত এ দিনও আদালত চত্বরে ধৃতদের হাতকড়া খুলে এক এক করে এজলাসে ঢোকানো হচ্ছিল। সেই সময় সজল আদালতের ভিড়ের সুযোগ নিয়ে পোস্ট অফিস মোড় হয়ে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। পালানোর সময় তাঁর হাতে হাতকড়া ছিল।
অভিযুক্ত পলাতক বোঝামাত্রই দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মী খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে মীর আলম হোসেন নামে এক পুলিশকর্মী মোটরবাইক নিয়ে অভিযুক্ত সজলের বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হন। কিন্তু সেখানেও তাঁকে না পাওয়ায় তিনি সিউড়ি শহরের নানা এলাকায় খোঁজাখুঁজি করেন। অবশেষে তিনি জানতে পারেন যে সজল সিউড়ি তিলপাড়া ব্যারেজ সংলগ্ন সতীঘাট শ্মশানে আছেন। এরপরেই তিনি সেখানে যান। কিন্তু অভিযুক্ত আলমকে দেখেই দৌড়ে শ্মশান সংলগ্ন একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ঢুকে যান। পিছু ধাওয়া করেন আলম। অবশেষে ওই কলেজের পড়ুয়াদের সহযোগিতায় সজলকে ধরে ফেলেন আলম। তাঁর হাতে হাতকড়া পরিয়ে গাড়ির পিছনে বসিয়ে পুনরায় আদালতে নিয়ে আসা হয়।
আদালতে সরকারি আইনজীবী মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভিড়কে কাজে লাগিয়েছিল অভিযুক্ত। কিন্তু সে বেশি দূর যেতে পারেনি।’’ তবে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে অভিযুক্ত কী ভাবে পালাল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, দিন দিন মাদক আইনের ধারায় মামলায় অভিযুক্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। এ দিনও ৭৬ জন অভিযুক্ত ছিলেন। সঙ্গে অভিযুক্তদের পরিবারের সদস্য। ফলে ওই সময় আদালত চত্বরে প্রচুর মানুষের সমাগম হয়। সেই ভিড়কে কাজে লাগিয়েই পালাতে সক্ষম হয়েছে অভিযুক্ত। জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং বলেন, ‘‘অভিযুক্ত পুনরায় ধরা পড়েছে। আমরা ওঁর বিরুদ্ধে পৃথকভাবে মামলা রুজু করব।’’