বোলপুরে তৃণমূল কার্যালয়ের পুজোয় প্রতিমা সাজাচ্ছেন অনুব্রত মণ্ডল। মঙ্গলবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
দু’বছর পর এ বার নিজের হাতে পরিপাটি করে বীরভূম জেলা কার্যালয়ের কালীপুজোয় প্রতিমাকে প্রায় ৫৬০ ভরি সোনার অলঙ্কার দিয়ে সাজালেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল।
গত বছর স্ত্রীর অকাল প্রয়াণ ও তার আগের বছর মাতৃবিয়োগের জন্য নিজে প্রতিমা স্পর্শ করতে পারেননি অনুব্রত। সে জন্য আক্ষেপও থেকে গিয়েছিল তাঁর। মঙ্গলবার কালীপুজোর ঠিক আগে নিজের হাতে দেবীকে সাজাতে পেরে সেই আক্ষেপ অনেকটাই মিটেছে বলেw জানান অনুব্রত। এ দিন তিনি বলেন , “গত বার আমার প্রার্থনা মা শুনেছিলেন। এ বারও আমার প্রার্থনা শুনবেন।’’ চার কেন্দ্রে উপনির্বাচনে জয় নিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘মায়ের কাছে ২২০ চেয়েছিলাম। মা তাই করে দিলেন। এই জয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন, সততা এবং তাঁকে যেভাবে কুৎসা করা হয়েছিল, তার জবাব দিয়েছে মানুষ।’’
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৮৮ সাল থেকে এই পুজো হয়ে আসছে। তখন তৃণমূল তৈরি হয়নি। কংগ্রেস দফতরে অনুব্রত মণ্ডলের উদ্যোগেই পুজো হত। দলীয় কর্মীরা পুজোর সমস্ত দায়িত্বে থাকলেও সবটাই পরিচালনা করেন অনুব্রত নিজে। দলের শ্রীবৃদ্ধির সঙ্গে বেড়েছে পুজোর জাঁকজমক।
মঙ্গলবার প্রতিমা নিয়ে আসা হয় বোলপুরের দলীয় কার্যালয়ে। গত বছর প্রায় ৩৫০ ভরি গয়না পরানো হয়েছিল দেবীকে। এ বছর মুকুট, সীতাহার, কোমর বিছে, বাউটি, বাজুবন্ধন, আংটি, শাঁখা বাঁধানো, পলা বাঁধানো মিলিয়ে আরও ২১০ ভরি যুক্ত হয়েছে। প্রতিমা দর্শনের জন্য এ দিন থেকে কালীপুজো পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশের ছাড়পত্রও দেওয়া হয়েছে। দেবী মূর্তি পাহারায় সর্বক্ষণের জন্য থাকবেন তিন জন করে সশস্ত্র পুলিশ কর্মী।
তৃণমূল সূত্রে খবর, দলীয় কর্মী ছাড়াও বহু বাসিন্দার মনস্কামনা পূর্ণ হওয়ায় তাঁরা অলঙ্কার দিয়ে গিয়েছেন। কালীপুজোর দিন পর্যন্ত সোনার পরিমাণ ৫৭০ ভরি ছাড়িয়ে যাবে বলে বলছেন দলের কর্মীরা। অনুব্রত বলেন, ‘‘দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যবাসীর মঙ্গল কামনায় এই পুজো হচ্ছে।’’
বিধানসভা ভোটে জয়ের পরে আগামী ভোট নিয়ে আত্মবিশ্বাসী অনুব্রত। তিনি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ও পুরভোট নিয়ে চাইতে হবে না, মায়ের ইশারাতেই সব হয়ে যাবে। মায়ের কাছে যা চাওয়ার ঠিক সময়ে চেয়ে নেব। এ বারও বড় মাঠে খেলতে হবে। মা ঠিক জয়লাভ করিয়ে দেবেন।’’ বিরোধীদের নিয়ে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘এ বারও তো অনেক লাফালাফি দেখলাম। অনেক নতুন নতুন জার্সি দেখলাম, কোথায় গেল বিরোধীরা!’’