পুরুলিয়া শহরের মুনসেফডাঙায় প্রহ্লাদ বাউরি শিশু উদ্যান। নিজস্ব চিত্র।
শিশু উদ্যানে শিশুদের দেখা নেই, বদলে গরু চরে বেরাচ্ছে। অযত্নে, অবহেলায় ক্রমে জেল্লা হারিয়েছে পুরুলিয়া শহরের মুনসেফডাঙা এলাকার প্রহ্লাদ বাউরি শিশু উদ্যান। বাম আমলে তৈরি হওয়া উদ্যানটির বেহাল দশা বর্তমানে বেশ চোখে লাগে। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, বাচ্চাদের সরিয়ে উদ্যানের দখল নিয়েছে বড়রা। ফলে নানা অসামাজিক কাজ কর্মের আড্ডা হয়ে উঠেছে শিশু উদ্যানটি। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়েছে শিশু উদ্যানের দোলনা-সহ বাচ্চাদের খেলার বিভিন্ন সরঞ্জাম।
পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা নিলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুরুলিয়া শহরে সিপিএমের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা প্রহ্লাদ বাউরি নানা সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বিনায়ক ভট্টাচার্য পুরপ্রধান থাকাকালীন এই শিশু উদ্যানটি তৈরি করা হয়েছিল। এক সময় বাচ্চাদের কলরবে মুখরিত হয়ে থাকত গোটা পার্ক। কিন্তু এখন হাল খুব খারাপ, অসামাজিক কাজও চলে ওখানে। পুরসভার বিষয়টি দেখা উচিৎ।” স্থানীয় সুভাষ বাউরি, বিবেক বাউরি জানান, এক বার পার্কের একাংশে কমিউনিটি টয়লেট গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটিও সমাপ্ত হয়নি।
এলাকার শিশু উদ্যানটি নষ্ট হতে বসায় আক্ষেপ বাড়ছে বাসিন্দাদের মধ্যে। তাঁদের কথায়, “পুরুলিয়া শহরের শিশুদের বেড়ে ওঠার জন্য উপযুক্ত পরিবেশের বড্ড অভাব রয়েছে। বাচ্চাদের জন্য উদ্যান গড়ে তোলা খুব জরুরি। প্রশাসন নজর দিক।”
সিপিএম দলের প্রাক্তন পুরপ্রধান বিনায়ক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “আমার সময় পার্কটিকে সাজানো হয়েছিল, নিয়মিত পরিচর্যা করা হত, সেটি যদি বর্তমানে নষ্ট হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে পুরসভার বিষয়টি দেখা উচিত।” পার্কটির রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে সে ভাবে সদুত্তর দিতে পারেননি স্থানীয় তিন নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুনয় কবিরাজ। তবে তিনি বলেন, “পার্কটির জায়গায় একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। সঙ্গে এলাকার অস্থায়ী দোকানগুলি স্থায়ী করে সম্প্রসারণের চিন্তা ভাবনাও চলছে। পার্কটি ছোট করে সেই কাজগুলি করা হতে পারে।” এ নিয়ে পুরুলিয়ার পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালি বলেন, “আমরাও দেখছি কী ভাবে পার্কটিকে আরও সুন্দর করে সাজানো যায়। সেক্ষেত্রে স্থানীয়দের সহায়তাও প্রয়োজন। কারণ ওই এলাকায় পার্কের জায়গা দখল করে দোকান করা হয়েছে, গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, মন্দির তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপ চলে বলে শুনেছি। তা রুখতে স্থানীয়দেরও এগিয়ে আসতে হবে।”
এ নিয়ে পুরসভাকে দায়ী করে জেলা বিজেপির সভাপতি বিবেক রঙ্গার কটাক্ষ, “যেখানে টাকা আছে, সেখানে পুরসভা ছোটাছুটি করে। পরিবেশ রক্ষার দিকে পুরসভার নজর নেই।”