বলপুরের বিখ্যাত পৌষ মেলা। — ফাইল চিত্র।
এ বারও ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা করার অনুমতি দেননি বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তাই পূর্বপল্লির পৌষমেলার মাঠে মেলা না হলেও বোলপুর ডাকবাংলো মাঠে আয়োজন করা হয়েছে বিকল্প পৌষমেলার। সেই মেলায় আসার জন্য উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে সৌজন্যের নজির সৃষ্টি করলেন মেলার উদ্যোক্তারা।
বুধবার সকালে পুরপ্রধান পর্ণা ঘোষ, উপ-পুরপ্রধান ওমর শেখ, হস্তশিল্প সমিতির সম্পাদক আমিনুল হুদা সহ কয়েকজন বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে বিকল্প পৌষমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য উপাচার্যকে আমন্ত্রণ জানান। যদিও এদিন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সকালের দিকে উপাচার্য না আসায় বিশ্বভারতী ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিবের হাতেই আমন্ত্রণপত্র দিয়ে আসতে হয় উদ্যোক্তাদের। পর্ণা বলেন, “আমরা উপাচার্যর পাশাপাশি এ দিন সমগ্র বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে মেলায় আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছি।’’ উপাচার্য ছাড়াও এ দিন বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত, সবুজকলি সেন, শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সদস্যরা ও ঠাকুর পরিবারের অন্যতম সদস্য সুপ্রিয় ঠাকুরকে বিকল্প পৌষমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়।
তবে পৌষমেলা না-করলেও ঐতিহ্য মেনে পৌষ উৎসব পালন করবে বিশ্বভারতী। লাগাতার ছাত্র আন্দোলনে বারবার তেতে উঠেছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। উপাচার্য গৃহবন্দি থাকায় স্থগিত করতে হয়েছে সমাবর্তন অনুষ্ঠান। পৌষ উৎসবের আয়োজন নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। অনুকূল পরিবেশ তৈরি হলে পৌষ উৎসব হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতেই সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বৈঠকে পৌষ উৎসবের রূপরেখা ঠিক করেছেন কর্তৃপক্ষ।
বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছেন, চিরাচরিত প্রথা মেনে ৭ পৌষ ভোরে বৈতালিক ও সকালের উপাসনের মধ্যে দিয়েই পৌষ উৎসবের সূচনা করা হবে। মহর্ষি স্মারক বক্তৃতা থেকে শুরু করে খ্রিস্ট উৎসব, প্রথা মেনে সবই হবে। তবে এ বার পৌষ উৎসব পালনের পাশাপাশি অনুলোকসংস্কৃতির অনুষ্ঠান হবে বলে বিশ্বস্ত সূত্রের খবর। সেখানে বাংলার হারিয়ে যাওয়া বিভিন্ন লোকসংস্কৃতিকে তুলে ধরা হবে। এতদিন যে-সব অনুষ্ঠান পৌষমেলার সময় মেলা প্রাঙ্গণে হত, এ বার পৌষ উৎসবে আশ্রম প্রাঙ্গণে সেই সমস্ত অনুষ্ঠানের আয়োজন করার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও এই অনুষ্ঠান সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত বিশ্বভারতীর তরফে কোনও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়নি।