শান্তিনিকেতনে পূর্বপল্লির মাঠে ‘বিকল্প’ মৌষমেলায় শাল পট্টিতে ভিড়ে জমেছে উঠেছে। ছবিঃ বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
খাতায়-কলমে পূর্বপল্লির মাঠে এ বারের ‘বিকল্প’ পৌষমেলা আজ, বৃহস্পতিবার। তবে, মেলার পরে দোকানদারদের মাঠ থেকে কী ভাবে সরানো হবে, তা নিয়ে ভাবনায় জেলা প্রশাসন। কারণ, বিগত দিনে ‘ভাঙা মেলা’ নিয়ে নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
ঘোষিত ভাবে শান্তিনিকেতনের পৌষমেলা চার দিনের। কিন্তু, ফি বছর নিয়ম বহির্ভূত ভাবে মেলা আরও কয়েক দিন গড়ায়। বিগত বছরগুলিতে পৌষমেলার শেষে ‘ভাঙা মেলা’কে কেন্দ্র করে গুচ্ছের অভিযোগ উঠেছে। গোলমালও বেধেছে। ২০১৯ সালে শেষবার বিশ্বভারতীর উদ্যোগে পৌষমেলা হয়েছিল পূর্বপল্লির মাঠে। সেবারও চার দিনের মেলা শেষের পরে দোকানদারদের তুলতে হিমশিম খেতে হয়েছিল কর্তৃপক্ষকে। মেলা তুলতে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ ওঠে বিশ্বভারতীর বিরুদ্ধে। সেই ঘটনা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। ২০২১ ও ‘২২ সালেবোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি, বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ‘বিকল্প’ পৌষমেলা হয়েছে বোলপুরের ডাকবাংলো মাঠে। সেখানেও নির্ধারিত দিনের পরে মাঠের অধিকাংশ জায়গা জুড়ে মেলা বসে থাকতে দেখা গিয়েছিল।
এ বছর বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ নিজেদের মাঠে প্রশাসনকে পৌষমেলা করার অনুমতি দিলেও বেশ কিছু শর্ত দিয়েছিলেন। শর্তগুলির অন্যতম, ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত মেলা হবে। তার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মেলা তুলে দিতে হবে। নিয়ম মেনে ২৪ ডিসেম্বর থেকে বৃহস্পতিবার মেলা আনুষ্ঠানিক ভাবে শেষ হচ্ছে। কিন্তু, বিশাল আকারের এই মেলা থেকে দোকানদারদের ২৮ তারিখ শেষ হওয়ার পরেই তোলা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে প্রশাসনের আধিকারিকেরাই। কারণ, ভাল বেচাকেনা হয়নি যুক্তি দিয়ে অনেক ব্যবসায়ী আরও কিছুদিন থাকতে চাইতে পারেন। যা নিয়ে আবারও সমস্যা তৈরি হতে পারে।
যদিও মহকুমাশাসক (বোলপুর) অয়ন নাথ বলেন, “বৃহস্পতিবার নির্ধারিত সময়ের পরে রাতেই মেলা শেষ করা হবে। তার জন্য এখন থেকেই মাইকিং চলছে। মেলা শেষ হওয়ার পরে মেলা তুলে দেওয়া নিয়ে আলাদা কমিটি হয়েছে। ব্যবসায়ীদের অনুরোধ, মেলা শেষ হওয়ার পরে তাঁরা যেন জবরদখল করে বসে না-থাকেন।” বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির কোষাধক্ষ্য সুব্রত ভকত বলেন, “পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে যেহেতু মেলা হচ্ছে, তাই মেলা তোলার ব্যাপারে ব্যবসায়ীরা আমাদের সহযোগিতা করবেন বলেই আশা রাখি।”