উদ্ধার করা হচ্ছে বৃদ্ধ মহেশ্বর সোরেনের দেহ। নিজস্ব চিত্র।
ছেলে-বৌমাকে আটক করে, তাদের দেখিয়ে দেওয়া জায়গায় দ্বারকেশ্বরের বালির চর খুঁড়ে উদ্ধার হল বৃদ্ধের দেহ। শুক্রবার বিকেলে পুরুলিয়ার কাশীপুর থানা এলাকার গরামকুলির ঘটনা। নিহতের নাম মহেশ্বর সোরেন (৭২)। বৃদ্ধের বড় ছেলে ও ছোট ছেলের অভিযোগের ভিত্তিতে মেজ ছেলে শ্রীকান্ত সোরেন ও তাঁর স্ত্রী নমিতাকে আটক করেছে পুলিশ।
গরামকুলির বাড়িতে শ্রীকান্ত ও নমিতার সঙ্গে থাকতেন মহেশ্বরবাবু। শ্রীকান্ত এলাকায় দিনমজুরি করেন। বড় ছেলে জয়দেব ও ছোট ছেলে সঞ্জয়ও দিনমজুর। তাঁরা থাকেন খড়্গপুরে। মাঝেমধ্যে গরামকুলিতে যেতেন। সঞ্জয়ের দাবি, বাবার সঙ্গে তাঁর শেষ ফোনে কথা হয়েছিল সোমবার সকালে। রাতে এক পড়শির সঙ্গে ফোনে কথা বলতে গিয়ে জানতে পারেন, মহেশ্বরবাবুর সঙ্গে মেজ ছেলে আর বৌমার ঝামেলার আওয়াজ শোনা গিয়েছে। সঞ্জয় বলেন, ‘‘প্রায়ই ঝগড়া হত। বিশেষ গুরুত্ব দিইনি।’’
সঞ্জয়ের দাবি, খোঁজখবর নিতে ওই পড়শিকে তিনি বুধবার ফোন করেন। মহেশ্বরবাবু প্রায়ই বাড়ির বাইরে বসে থাকতেন। ওই পড়শি জানান, তাঁকে দেখা যাচ্ছে না। ফোন করলে শ্রীকান্ত কিছু বলতে পারেননি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দাদা জয়দেবের সঙ্গে সঞ্জয় গ্রামের বাড়িতে আসেন। বাবা কোথায়, মেজ ভাই তখনও বলতে পারেননি। সঞ্জয় বলেন, ‘‘বাড়ির একটা জায়গায় রক্তের দাগের উপর গোবর লেপা ছিল। দাদা স্বীকার করতে চাইছিল না।’’
শুক্রবার সকালে জয়দেব ও সঞ্জয় কাশীপুর থানায় গিয়ে বিষয়টি জানান। পুলিশ শ্রীকান্ত ও নমিতাকে আটক করে নিয়ে যায়। পুলিশের দাবি, জেরায় তাদের কাছে শ্রীকান্ত খুনের কথা স্বীকার করেছে। জানিয়েছে, মহেশ্বরবাবু নমিতার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করায় রাগের বশে সে বাঁশ দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করে। বাবা লুটিয়ে পড়লে ভয়ে পালিয়ে যায়। সন্ধ্যায় ফিরে এসে দেখে, মহেশ্বরবাবুর মৃত্যু হয়েছে। রাতে স্ত্রীর সঙ্গে দেহ নিয়ে গ্রাম থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে গিয়ে দ্বারকেশ্বরের চরের বালিতে পুঁতে ফেলে।
বিকেল পৌনে ৫টা নাগাদ পুলিশ গিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দেহ উদ্ধার করেছে। দ্বারকেশ্বরের চরে ভিড় জমিয়েছিল কৌতূহলী জনতা। সন্ধ্যা পর্যন্ত পাওয়া খবরে শ্রীকান্ত ও নমিতাকে আটক করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। সঞ্জয় জানান, রাতেই লিখিত অভিযোগ করবেন।