মেজিয়া থানার ফেসবুক পেজে চলছে প্রচার।
বাঙালির ঘর আলো করুক মৃৎশিল্পীদের হাতে গড়া প্রদীপ। দীপাবলির আগে এই ডাক ঘুরে ফিরছে ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য়। আহ্বান এ বার এল বাঁকুড়ার মেজিয়া থানা থেকেও।
গত কয়েক বছর ধরে বাজারে সস্তার বৈদ্যুতিক আলোর রমরমায় মাটির প্রদীপ অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। দীপাবলির বাজারে যতটা বিক্রির আশা থাকে, তাও কমছে ক্রমশ। এই পরিস্থিতিতে মেজিয়া থানার পুলিশ মানুষকে সচেতন করতে উদ্যোগী হয়েছে। মেজিয়ার ওসি মানস চট্টোপাধ্যায় জানান, সিভিক ভলান্টিয়ারেরা লোকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মাটির প্রদীপ কেনার ব্যাপারে উৎসাহ দিচ্ছেন। এ ছাড়া, থানার নিজস্ব ‘ফেসবুক পেজ’-এ মাটির প্রদীপ কেনার জন্য মানুষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। পুলিশ আধিকারিক ও সিভিক ভলান্টিয়াররা নিজেদের ‘হোয়াটসঅ্যাপ স্টেটাস’-এও এই আবেদন করেছেন। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, “মেজিয়া থানার উদ্যোগটি খুবই ভাল। দীপাবলির বাজারে মাটির প্রদীপ কেনার চল বাড়লে জেলার প্রত্যন্ত এলাকার মৃৎশিল্পীরা উপকৃত হবেন। সেই লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ।’’
নামো-মেজিয়ার মৃৎশিল্পী তরুণ কুম্ভকার, সনাতন কুম্ভকারেরা বলেন, “একটা সময় ছিল, দীপাবলির জন্য আমরা অনেক আগে থেকে প্রদীপ বানানোর কাজ শুরু করতাম। এখন আর সেই বাজার নেই। পুলিশের এই উদ্যোগে মানুষ যদি সাড়া দেন, তাহলে উপকৃত হব।”
শুধু পুলিশ নয়, মাটির প্রদীপ কেনা নিয়ে ব্যক্তিগত ভাবে প্রচার চালাচ্ছেন অনেকেই। এগিয়ে এসেছেন খাদি ও গ্রামীণ শিল্প বোর্ডের বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলার দায়িত্বে থাকা আধিকারিক প্রদীপ চৌধুরীও। তিনি বলেন, “বাজারে চিনা আলো ছেয়ে যাওয়ায় জেলার মৃৎশিল্পীরা দীপাবলির বাজার অনেকটাই হারিয়েছেন। এতে আখেরে আমাদের গ্রামীণ অর্থনীতিই ক্ষতির মুখে পড়ছে। দীপাবলিতে ঘরে ঘরে মাটির প্রদীপ দেওয়ারই রেওয়াজ রয়েছে। তাই প্রত্যেকেই কিছু হলেও মাটির প্রদীপ কিনলে লাভ হয়।’’
বাঁকুড়া মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান জানিয়েছেন, তিনিও মাটির প্রদীপ কিনবেন। কিনতে অন্যদের উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছেন। তাঁর কথায়, “মাটির প্রদীপের ব্যবহার বাড়লে কেবল শিল্পীরাই যে উপকৃত হবেন তা নয়, বিদ্যুতের অপচয়ও কমবে। তাই এ নিয়ে সবারই সচেতন হওয়া দরকার।”