নন্দীকেশ্বরীতলা ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র গড়ার পরিকল্পনা

বীরভূমের পাঁচ গুরুত্বপূর্ণ সতীপীঠের অন্যতম। অথচ তার দিকে নজর নেই প্রশাসনের। অথচ রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে তারাপীঠ বা বক্রেশ্বরের থেকে ঢের পিছিয়ে রয়েছে সাঁইথিয়ার নন্দীকেশ্বরী মন্দির। এমনকী, ঠাঁই মেলেনি জেলা প্রশাসনের সরকারি ওয়েবসাইটের পর্যটন কেন্দ্রের তালিকাতেও।

Advertisement

অনির্বাণ সেন

সাঁইথিয়া শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:১২
Share:

মন্দিরের আগে বসেছে তোরণ। সাঁইথিয়ায় তোলা নিজস্ব চিত্র।

বীরভূমের পাঁচ গুরুত্বপূর্ণ সতীপীঠের অন্যতম। অথচ তার দিকে নজর নেই প্রশাসনের। অথচ রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে তারাপীঠ বা বক্রেশ্বরের থেকে ঢের পিছিয়ে রয়েছে সাঁইথিয়ার নন্দীকেশ্বরী মন্দির। এমনকী, ঠাঁই মেলেনি জেলা প্রশাসনের সরকারি ওয়েবসাইটের পর্যটন কেন্দ্রের তালিকাতেও।

Advertisement

‘দুয়োরানি’র ছবিটা পাল্টাতে বিশেষ পরিকল্পনা নিল সাঁইথিয়া পুরসভা। বাইরের দুনিয়ার কাছে এই সতীপীঠের খোঁজ দিতে একটি নজর-তোরণ ছাড়াও পর্যটন কেন্দ্রটির পরিকাঠামোগত মান বাড়াতেও বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে পুরসভা।

পুরপ্রধান বিপ্লব দত্ত বলছেন, ‘‘অনেকেই জানেন না, ৫১ সতীপীঠের একটি সাঁইথিয়াতেও রয়েছে। তাই বাইরে থেকে জেলায় আসা পর্যটকদের আমরা এ তথ্য জানাবার চেষ্টা করছি। বহু পর্যটক সাঁইথিয়ার উপর দিয়ে যাতায়াত করেন। তাঁদের সেই খোঁজ পৌঁছে দিতে আমরা নন্দীকেশ্বরীতলার চারমাথা মোড়ে মন্দিরের প্রচারে একটি অস্থায়ী তোরণ করেছি। নন্দীকেশ্বরীকে রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে ঢোকাতে যা যা দরকার, আমরা করব।’’

Advertisement

কলকাতা থেকে সাঁইথিয়ার দূরত্ব প্রায় ২২০ কিলোমিটার। কাছে পিঠে ময়ূরাক্ষী ও কোপাই নদী রয়েছে। সাঁইথিয়া রেল স্টেশন থেকে নন্দীকেশ্বরীতলার দূরত্ব মাত্র দেড় কিলোমিটার। কথিত আছে, এই নন্দীকেশ্বরীতলায় সতীর ঘাড়ের হাড় (‘নেক-বোন’) পড়েছিল। বিশেষজ্ঞরা বলেন এখানে দেবী নন্দিনী রূপে পূজিত হন। এখানকার ভৈরব নন্দীকেশ্বর। মন্দির চত্বরে একটি প্রাচীন বটবৃক্ষও রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ, ‘‘এই পীঠের এত গৌরবময় ইতিহাস, তবু আজও প্রচারের আলো পায়নি নন্দীকেশ্বরী। অথচ জেলার অন্যতম সতীপীঠ বক্রেশ্বর বা তারাপীঠে বাইরের দর্শনার্থীদের ভিড় চোখে পড়ার মতো। সেখানে প্রশাসন পর্যদ গড়ে দিয়েছে। উন্নয়নের জন্য তারা কোটি কোটি টাকাও পায়। সরকার সাঁইথিয়ার দিকেও এ বার তাকাক।’’ রাজ্যের কাছে এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করার দাবিও তাঁরা তুলেছেন।

পুরপ্রধান অবশ্য জানাচ্ছেন, নন্দীকেশ্বরীতলার উন্নয়নে পুরসভা ইতিমধ্যেই নানা পরিকল্পনা নিয়েছে। আগে মন্দিরের সামনে রেলের জমিতে কিছু অস্থায়ী দোকান ছিল। তার ফলে দূর থেকে মন্দির কারও নজরে আসত না। মাঝে রেলের অনুরোধে দোকানিরা সেখান থেকে সরে গিয়েছেন। পুরকর্মীরা সেই জমি পরিষ্কার করেছেন। ফলে মন্দির চত্বরের সামনেটা এখন আগের তুলনায় অনেকটাই পরিচ্ছন্ন হয়েছে বলে মানছেন বাসিন্দারাই। খুব শীঘ্রই মন্দিরে আসা পুণ্যার্থীদের কথা ভেবে বিধায়ক নীলাবতী সাহার এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে ৯ লক্ষ টাকা খরচ করে মন্দির চত্বরে একটি আধুনিক শৌচাগার গড়া হবে বলেও জানিয়েছেন পুরপ্রধান। এত দিন সেখানে কোনও শৌচাগার ছিল না।

নন্দীকেশ্বরীতলাকে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র বানানোর ভরসা দিচ্ছেন নীলাবতীদেবীও। তিনি বলছেন, ‘‘বিধানসভা অধিবেশনে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবকে আমি নন্দীকেশ্বরীতলাকে কেন্দ্র করে সাঁইথিয়ায় পর্যটন কেন্দ্র গড়ার প্রস্তাব দিয়েছি। পাশাপাশি তারাপীঠ, বক্রেশ্বরের মতোই সাঁইথিয়াতেও একটি উন্নয়ন পর্ষদ গড়ার মৌখিক প্রস্তাবও দিয়েছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement