বছরের শেষ রবিবারে সিউড়ির তসরকাটা জঙ্গলে ভিড়। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।
শীতকাল মানেই পিকনিক। করোনা পরিস্থিতিতেও বছরের শেষ রবিবারে জমল পিকনিকের আসর। স্বাস্থ্যবিধি তোয়াক্কা না করেই চলল খাওয়া দাওয়া। দূরত্ব বিধিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বক্স বাজিয়ে চলল দেদার নাচ গান। চরম অসচেতনতার এমনই চিত্র দেখা গেল সিউড়ি থানা এলাকার তসরকাটা এলাকায়। পিকনিকের উদ্দেশ্যে আসা পর্যটকদের দাবি, তাঁরা মাস্ক এনেছেন। নিজেদের মধ্যে পিকনিক করা হচ্ছে তাই খুলে রেখেছেন।
বছরের শেষ রবিবার সিউড়ির তিলপাড়া, তসরকাটায় জমে উঠেছিল চড়ুইভাতির আসর। সিউড়ি এবং পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলি থেকে কয়েকশো মানুষ এসে উপস্থিত ছিলেন ওই দুই পিকনিক স্পটে। কেউ সপরিবারে, কেউ বন্ধুদের সঙ্গে, কেউ আবার অফিসের সঙ্গীদের নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন পিকনিকের উদ্দেশ্যে। প্রায় ৩০ থেকে ৩৫টি পিকনিকের দলকে এ দিন দেখা গিয়েছে তসরকাটা এলাকায়। তবে তসরকাটার তুলনায় অনেকটা ফাঁকা ছিল তিলপাড়া ব্যারাজ সংলগ্ন এলাকা। সেখানে পাঁচ থেকে সাতটি পিকনিকের দল এসে উপস্থিত হয়েছিল। কিন্তু সেখানে কারও মুখে মাস্ক দেখা যায়নি।
সিউড়ি শহরের বাসিন্দাদের দাবি, গত কয়েক বছর ধরে তিলপাড়ার তুলনায় তসরকাটায় পিকনিকের ভিড় বেশি হচ্ছে। কারণ আগে মানুষ তিলপাড়া এলাকায় ময়ূরাক্ষী নদীর চড়ে পিকনিক করতে যেতেন। কিন্তু সেখানে সংশ্লিষ্ট দফতরের পক্ষ থেকে গেট বন্ধ করে ওই এলাকা ঘিরে দেওয়া হয়েছে, যে কারণে সেখানে পিকনিকের ভিড় কমে গিয়েছে। পরিবর্তে সিউড়ি এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষ তসরকাটার জঙ্গলটিকে পিকনিকের স্পট বানিয়েছেন। শহরবাসীর দাবি, তসরকাটা এলাকায় দেখার সেই অর্থে কিছু না থাকলেও। শহর থেকে কিছুটা দূরে গাছগাছালিতে ঘেরা ওই এলাকা মানুষের মনকে আকৃষ্ট করে।
এলাকাবাসীদের থেকে জানা গিয়েছে, অন্য বছর বড়দিন, বছরের শেষ রবিবার বা বছরের প্রথম দিনে প্রচুর মানুষ ওই দুই পিকনিক স্পটে এসে উপস্থিত হন। কিন্তু এ দিন সেই সংখ্যা ছিল অনেকটাই কম। তবে জেলা সদর এবং পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে ট্রেকার, অটো এবং ব্যক্তিগত গাড়িতে পিকনিক করতে বেশ কিছু সংখ্যক পর্যটক হাজির হয়েছিলেন। সিউড়ি শহরের বাসিন্দা নীলাঞ্জন দাস বলছেন, ‘‘গত কয়েক বছর ধরেই শীতের মরসুমে আমরা বন্ধুরা মিলে পিকনিক করে থাকি। যেহেতু বছরের শেষ রবিবার তাই বন্ধুরা মিলে হঠাৎ পরিকল্পনা করে চলে এসেছি।’’ স্বাস্থ্য বিধি না মেনে কেন পিকনিক এই প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, ‘‘মাস্ক পরে এসেছিলাম। খাওয়ার আগে খুলে রেখেছি। তাছাড়া আমাদের অনেকের কাছে হ্যান্ড স্যানিটাইজারও আছে।’’ একই কথা বলেছেন অনেকেই।