তোলা ফেরত চেয়ে বিক্ষোভ

সম্প্রতি কলকাতায় একটি সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর দলের নেতা এবং জন প্রতিনিধিদের নির্দেশ দেন, বিভিন্ন প্রকল্পে নেওয়া ‘কাটমানি’ ফেরত দিতে হবে। এর পরেই বিভিন্ন এলাকায় ‘কাটমানি’ ফেরতের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সোনামুখী শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৯ ০০:৪৪
Share:

প্ল্যাকার্ড হাতে। ছবি: শুভ্র মিত্র

‘কাটমানি’ ফেরত চেয়ে রবিবার বিকেলে বাঁকুড়ার সোনামুখী পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর ঝিলিক দত্তের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এলাকার শতাধিক বাসিন্দা। তাঁদের অভিযোগ, ‘হাউস ফর অল’ প্রকল্পে বাড়ি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কাউন্সিলর ২৫-৪০ হাজার টাকা কাটমানি নিয়েছেন তাঁদের থেকে। কাটমানি দেওয়ার পরেও প্রায় ৬০ জন বাসিন্দাকে বাড়ি করে দেওয়া হয়নি। বিক্ষোভ শুরুর আগেই বাড়িতে তালা দিয়ে এলাকা ছাড়েন কাউন্সিলর। ফোনে যোগাযোগ করা হলে অভিযোগ উড়িয়ে তাঁর দাবি, ‘‘সব সাজানো অভিযোগ। যদি কেউ প্রমাণ দিতে পারে যে, আমি পঞ্চাশ পয়সা নিয়েছি, তবে পদত্যাগ করব।’’

Advertisement

সম্প্রতি কলকাতায় একটি সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর দলের নেতা এবং জন প্রতিনিধিদের নির্দেশ দেন, বিভিন্ন প্রকল্পে নেওয়া ‘কাটমানি’ ফেরত দিতে হবে। এর পরেই বিভিন্ন এলাকায় ‘কাটমানি’ ফেরতের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়।

এ দিন বিকেল ৫ টা নাগাদ ঝিলিকদেবীর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন তাঁরই ওয়ার্ডের শতাধিক বাসিন্দা। তাঁদের দাবি, ‘হাউজ ফর অল’ প্রকল্পে বাড়ি করে দেওয়ার জন্য তাঁদের থেকে ‘কাট মানি’ নিয়েছেন ওই পৌর প্রতিনিধি। এক বিক্ষোভকারীর অভিযোগ, ‘‘কারও থেকে ২৫ হাজার টাকা কাটমানি নেওয়া হয়েছে। আবার কারও থেকে নেওয়া হয়েছে ৪০-৫০ হাজার টাকা।’’ ঝিলিকদেবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, যাঁরা তাঁকে টাকা দিয়েছিলেন, তাঁদের ব্যাঙ্কের পাশ বই এবং সই করা চেকও তিনি রেখে দিয়েছিলেন। এক মহিলার দাবি, কাউন্সিলরের কাটমানি জোগাড় করতে কানের দুল বিক্রি করেছে হয়েছিল তাঁকে। স্বনির্ভর গোষ্ঠার সদস্য মামনি দে, রূপা খাঁর অভিযোগ, ‘‘মহিলা ধার দেনা করে বাড়ির জন্য টাকা দিয়েছি কাউন্সিলারকে।’’ বাবলু সো, দেব দাস সূত্রধর, প্রদীপ পালের অভিযোগ, টাকা দেওয়ার পরেও তাঁরা বাড়ি পাননি। ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা হরিধন রুদ্র জানান, টাকা দেওয়ার পরে তিনি বাড়ি পেয়েছেন।

Advertisement

কাটমানি নিয়েও ওই কাউন্সিলর ৬০ জনকে বাড়ি তৈরি করে দেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁকে কাটমানি দিয়ে বাড়ি পেয়েছেন ৫০ জনের মতো বাসিন্দা। তাঁরাও টাকা ফেরতের দাবি জানাতে এ দিন বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছিলেন বেশ কয়েক জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকও। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ঝিলিকদেবীর বিরুদ্ধে জেলাশাসক, পুলিশ সুপার-সহ জেলার বিভিন্ন আধিকারিকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। অভিযোগ জানানো হয়েছিল পুরপ্রধানের কাছেও। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি তাঁর বিরুদ্ধে। যদিও সোনামুখীর পুরপ্রধান সুরজিৎ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘বিজেপির উঠতি নেতা-কর্মীরা এই সব অপপ্রচার করছে। দলের কোনও কাউন্সিলরই কাটমানি নেননি। কাটমানির প্রমাণ দিতে পারলে ব্যবস্থা নেব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement