Water Wastage

শহরে জল-কষ্ট, পাইপ ফাটিয়ে দিনভর জল নষ্ট

কংসাবতী নদী শুকিয়ে যাওয়ায় বালির স্তরেও জল কমে গিয়েছে। এর জেরে পুরুলিয়া শহরে জল সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১১ মে ২০২৩ ০৯:৫০
Share:

কংসাবতী নদীর বিভিন্ন জায়গায় পাইপ ফাটিয়ে চলছে স্নান। নিজস্ব চিত্র

একে কংসাবতী নদী গর্ভে জলস্তর নেমে যাওয়ায় শহরে জল সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। সেই সমস্যার মধ্যেই ধরা পড়ল পাইপ ফাটিয়ে জলের দেদার জলের অপচয়। পুরুলিয়া শহরের উপকন্ঠে কংসাবতী নদীর শিমূলিয়া ঘাট পরিদর্শনে গিয়ে এমনই দৃশ্য দেখতে পেলেন পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালি এবং জল সরবরাহ বিভাগের বাস্তুকারেরা। এরপরেই তা প্রশাসনের নজরে আনেন পুরপ্রধান। পুরসভার তরফে প্রশাসনের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানানো হয়েছে।

Advertisement

কংসাবতী নদী শুকিয়ে যাওয়ায় বালির স্তরেও জল কমে গিয়েছে। এর জেরে পুরুলিয়া শহরে জল সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। পাড়ায় পাড়ায় ট্যাপকলে এখনও পর্যন্ত জল দেওয়া গেলেও পুরসভা বাড়িতে একদিন অন্তর জল সরবরাহ করছে। এই পরিস্থিতিতে পুরসভা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শহরবাসীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছে। আবেদন জানানো হয়েছে, যেটুকু জল মিলছে তা যেন শুধু পান করার জন্যই ব্যবহার করা হয়।

পুরসভা জানাচ্ছে, সঙ্কটের অন্যতম প্রধান কারণ নদীতে বালির স্তর কমে যাওয়া। গ্রীষ্মে নদী যখন শুকিয়ে যায়, সে সময় বালির স্তরে সঞ্চিত জলই নদীর তলা থেকে পাম্পের সাহায্যে তুলে শহরবাসীকে দেওয়া হয়। জলের সেই ভাঁড়ারেও টান পড়েছে।

Advertisement

এই অবস্থায় নদীতে থাকা পাইপ ফাটিয়ে জল নষ্টের ঘটনা সামনে এসেছে। মঙ্গলবার শিমূলিয়া ঘাট পরিদর্শনে গিয়ে পুরপ্রধান ও বাস্তুকারদের চোখে পড়ে, নদী বক্ষে পাইপলাইনের একাধিক জায়গা ফাটানো হয়েছে। সেই জলে কিছু মানুষ স্নান করছেন। খাওয়ার জন্যও অনেকে সেখান থেকে জল সংগ্রহ করছেন।

পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘নদীর তলা থেকে পাইপের মাধ্যমে জল তুলে রিজার্ভারে ফেলা হয়। সেই পাইপলাইনের অন্তত চারটি জায়গা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’

পুরপ্রধান নবেন্দু বলেন, ‘‘জলস্তর একেবারে তলানিতে চলে যাওয়ায় শহরে এখন জল সরবরাহে সঙ্কট দেখা দিয়েছে।। অথচ শিমূলিয়া ঘাটে নদী বক্ষে থাকা পাইপ লাইন কেউ বা কারা ফাটিয়ে দিয়ে দিনভর প্রচুর জল নষ্ট করছেন। শহরের চাহিদার অর্ধেক জলও মিলছে না। বর্তমান পরিস্থিতিতে যেখানে এক ফোঁটা জলও মহার্ঘ, সেখানে এ ভাবে পানীয় জলের অপচয় মানা যায় না।’’ তিনি জানান, পাইপ ফাটিয়ে দেওয়ায় জল যে ভাবে নষ্ট হচ্ছে তার স্থির ছবি এবং ভিডিয়ো তিনি পুলিশ-প্রশাসনের কাছে পাঠিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছেন।

এরপরেই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ওই এলাকাটি পুরুলিয়া ১ ব্লক ও টামনা থানার আওতাধীন। পুলিশ প্রশাসনের কর্তাদের মধ্যে আলোচনার পরে বুধবার এলাকায় মাইকে প্রচার করা হয় পাইপ ফাটিয়ে জল নষ্ট করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করা হয়। পুরসভা জানিয়েচে, পাইপের ফাটল মেরামতের কাজ শুরু হচ্ছে। তবে নদীর ঘাট সংলগ্ন দু’-তিনটি গ্রামের মানুষজন ওই এলাকা থেকে জল সংগ্রহ করতেন। প্রবল গরমে তাঁদের কষ্টের কথা ভেবে কাছাকাছি দু’টি ট্যাপকল চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিডিও (পুরুলিয়া ১) অনিরুদ্ধ ঘোষ বলেন, ‘‘পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে এলাকায় মাইকে প্রচার করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে নদী বক্ষে পাইপ ফাটিয়ে জল ব্যবহার করা হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, এর পাশাপাশি তারা নজরদারিও চালাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement