বেলিয়াতোড়ে হাতির পাল। নিজস্ব চিত্র।
অকাল বর্ষণের কোপ তো ছিলই। গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে হাতির হানা। ৮০টি হাতির একটি দল দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় রেঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকা। তার জেরে তছনছ বিঘের পর বিঘে জমির ফসল। পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে ঢুকে পড়া হাতির দলটিকে জঙ্গলে ফেরত পাঠানোর কাজ শুরু করেছে বন দফতর।
মাঠের ধান পাকলে ফি বছর খাবারের খোঁজে পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে বুনো হাতির দল হানা দেয় বাঁকুড়া জেলায়। এ বারও তার অন্যথা হয়নি। পুজোর ঠিক আগেই দফায় দফায় মোট ৮০ টি হাতি পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে প্রথমে বিষ্ণুপুর ব্লকে ঢুকে পড়ে। সেখান থেকে সটান দ্বারকেশ্বর নদ পার হয়ে সোনামুখী ব্লক হয়ে দলটি এখন হাজির হয়েছে বেলিয়াতোড় এবং বড়জোড়া রেঞ্জে। দিনের বেলায় হাতির দলটি সাধারণত জঙ্গলেই থাকে। কিন্তু সন্ধ্যা নামলেই খাবারের খোঁজে হানা দিচ্ছে জঙ্গল লাগোয়া ফসলের জমিতে। স্থানীয় বাসিন্দারা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও বিপত্তি থেকে কোনও ভাবেই নিস্তার মিলছে না। অগত্যা চোখের সামনে বিঘের পর বিঘে জমির ফসল নষ্ট হতে দেখতে হচ্ছে বেলিয়াতোড় রেঞ্জের লিগামোচন, শ্রীকৃষ্ণপুর, সারুলিয়া, বৃন্দাবনপুর-সহ জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলির কৃষকদের। ফলে ক্ষোভ বাড়ছে এলাকাবাসীর। বৃন্দাবনপুরের বাসিন্দা শ্যামল রায় যেমন বলছেন, ‘‘হাতির হানায় আমার সাত থেকে আট বিঘা জমির পাকা ধান নষ্ট করে দিয়েছে হাতির দল। আমরা নিজেদের উদ্যোগে হাতিগুলির হাত থেকে ফসল রক্ষার চেষ্টা করলেও শেষ রক্ষা হয়নি।’’
হাতির হানায় ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে শেষ পর্যন্ত বন দফতর হাতিগুলিকে খেদানোর উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু যে পথ দিয়ে হাতির দলটিকে পশ্চিম মেদিনীপুরের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে, সেখানকার বাসিন্দাদেরও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। ফলে বেলিয়াতোড় এবং বড়জোড়া রেঞ্জের মধ্যেই বন্দি থাকছে হাতির দলটি। বন দফতরের বেলিয়াতোড় রেঞ্জের আধিকারিক মইবুল ইসলাম বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই ২০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। কেন্দ্রীয় ভাবে হাতি খেদানোর কাজ শুরু হয়েছে। তবে হাতি যে পথ দিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে সেখানকার কৃষকদেরও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। তাঁরা বাধা দিচ্ছেন। আমরা নিরাপদ রাস্তা দিয়ে হাতিগুলিকে খেদানোর চেষ্টা চালাচ্ছি।’’