গোপালনগরে একটিই কল

গোপালনগর গ্রামের বাসিন্দাদের রাস্তা নির্মাণ করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, গ্রামে বিদ্যুৎ পোঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি উদ্যোগ নিয়েছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৭ ০১:৫১
Share:

সবেধন: নলকূপ ঘিরে ভিড়। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

গ্রামের রাস্তা এখনও মাটির। গ্রাম থেকে বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে সেই মেঠো আলপথই ভরসা।

Advertisement

নেই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। নেই শিশু শিক্ষা কেন্দ্র। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শেখার জন্য চার কিলোমিটার দূরে ফরিদপুর গ্রামে হেঁটে যেতে হয়। কিন্তু বর্ষার সময় গ্রামের পথ ঘাট জলে ডুবে থাকার স্কুল ছুট তারা। স্কুল যাওয়া হয়ে ওঠে না বর্ষাকাল। সরকারি নলকূপ বলতে দুটি— তার মধ্যে সচল একটি। তার উপর গ্রামের পঁয়ত্রিশ ঘর আদিবাসী পরিবার নির্ভর করে। এ বার প্রবল গ্রীষ্মে পুকুরের জল শুকিয়ে যাওয়ার জন্য গ্রামের বাসিন্দারা তাঁদের গৃহপালিত পশুর দেখাশোনা থেকে গৃহস্থালি কাজকর্ম এবং পানীয় জল ওই একটি মাত্র নলকূপ থেকেই করছেন! এমন ‘নেই’ ছবি রামপুরহাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির খরুন পঞ্চায়েতের। গ্রামের নাম গোপালনগর।

রবিবার বিস্তারক অভিযান কর্মসূচিতে গ্রামে যান এলাকার বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি জেলা সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র মণ্ডল, বিজেপি নেতা অষ্টম মণ্ডল, অভয় রায়দের কাছে গ্রামের বাসিন্দারা তাঁদের গ্রামের রাস্তার না থাকা, সরকারি নলকূপের অভাব থেকে তাঁদের নানা ধরনের অসুবিধার কথা তুলে ধরেন। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি কেন্দ্র সরকারের যাবতীয় উন্নয়ন মূলক কাজের কোনও সুবিধা গ্রামবাসী এখনও পর্যন্ত পায়নি।

Advertisement

‘‘রাস্তায় এখনও মোড়াম পড়েনি। গ্রাম থেকে বাইরে যাওয়ার জন্য আলপথ ভরসা। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে কাঁধে করে, না হয় খাটিয়া করে তাদের নিয়ে আসতে হয়’’, বলছিলেন গ্রামের বাসিন্দা সনৎ পাউরিয়া, সুমাই কিস্কুরা। তাঁদের দাবি, ‘‘বাড়ি বাড়ি শৌচালয় নির্মাণ হয়নি। কীভাবে আছি, সরকার দেখে যাক।’’

এ গ্রামের উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়া তেরেসা মুর্মু মল্লারপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে।

তেরেসা বলছিলেন, ‘‘গ্রামের বাইরে চার কিলোমিটার দূরে প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রাথমিক শিক্ষা লাভের জন্য সেখানে যেতে হয়। এর জন্য অনেকে স্কুলের মাঝপথে পড়া ছেড়ে দেয়। বর্ষাকালে গ্রামের বাইরে চিলা কাঁদরের জলে মাঠ ঘাট ডুবে যায়। ফলে প্রায় দু’মাস স্কুল যেতে পারে না কেউ।’’ রামপুরহাট ১ ব্লকের বিডিও নিতীশ বালা বলেন, ‘‘জানা ছিল না গ্রামের এমন অবস্থার কথা। খোঁজখবর নেব। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র খোলার জন্য জায়গা পেলেই সরকার থেকে করে দেওয়া যাবে।’’

গোপালনগর গ্রামের বাসিন্দাদের রাস্তা নির্মাণ করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, গ্রামে বিদ্যুৎ পোঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বলেন, ‘‘রাস্তা নির্মাণের ক্ষেত্রে তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ থেকে করে দেওয়া হবে।’’ আশ্বাস দিয়েছেন, পঞ্চায়েতের সঙ্গে আলোচনা করে সরকারি নলকূপের ব্যবস্থাও করে দেওয়া হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement