ঝুঁকির যাত্রা। ইঁদপুরে। ছবি: শুভেন্দু তন্তুবায়
অন্য দিন পথে থাকে ৫০০ বাস। শুক্রবার ছিল একশোর কিছু বেশি। বাঁকুড়ায় মুখ্যমন্ত্রীর সভায় লোক আনার জন্য রাস্তা থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল ৪০০ বাস। ফলে সকাল থেকেই ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে নিত্যযাত্রী এবং বিশেষ প্রয়োজনে রাস্তায় বেরোনো মানুষজনকে। বাস না থাকার সুযোগে ভাল ব্যবসা করেছে ছোট গাড়িগুলি। যাত্রীদের দাবি, অন্য দিনের তুলনায় এ দিন দেড়গুণ বেশি ভাড়া হেঁকেছে ছোটগাড়িগুলি।
বাঁকুড়া-দুর্গাপুর রাস্তায় এ দিন বাসের সংখ্যা ছিল একেবারেই কম। অনেক যাত্রীর অভিযোগ, সুযোগ বুঝে বেশি ভাড়া নিয়েছে ছোট গাড়িগুলি। বড়জোড়া স্ট্যান্ডে বাসের অপেক্ষায় থাকা রবি মণ্ডল বলেন, ‘‘দুর্গাপুরে ২০০ টাকা দৈনিক বেতনে কাজ করি। যেতে আসতেই যদি ৫০ টাকা চলে যায়, তবে থাকবে কী?’’ দীর্ঘ ক্ষণ বাস না পেয়ে বেলিয়াতোড় বাস স্ট্যান্ড থেকে ফিরে যাওয়ার পথে মালতী ঘোষ বলেন, ‘‘জরুরি দরকারে আসানসোল যাওয়ার জন্য বেরিয়েছিলাম। বাস না থাকায় ফিরে যাচ্ছি।’’ বিষ্ণুপুর রসিকগঞ্জ বাস স্ট্যান্ডে এ দিন যাত্রীর সংখ্যা তুলনামূলক কম ছিল। নিত্যযাত্রীদের অনেকেই বাস না পেয়ে সমস্যায় পড়েন। কেউ কেউ গাড়ি ভাড়া করে কর্মস্থলে গিয়েছেন।
এ দিন রোগী নিয়ে বাঁকুড়া যাচ্ছিলেন অনিমেষ হালদার নামে এক যাত্রী। দীর্ঘ ক্ষণ বিষ্ণুপুর বাস স্ট্যান্ডে অপেক্ষা করার পরেও বাস না পেয়ে বাড়ি ফিরে যান তিনি। গঙ্গা মান্ডি নামে এক মহিলা বিষ্ণুপুর হাসপাতাল থেকে জয়পুরে বাড়ি ফেরার জন্য বিষ্ণুপুর বাস স্ট্যান্ডে বাসের অপেক্ষায় থাকেন কয়েক ঘণ্টা।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভায় লোক নিয়ে যাওয়ার জন্য বাস তুলে নেওয়া হয়েছিল। ফলে দক্ষিণ বাঁকুড়ার বিভিন্ন রুটের যাত্রীরা চরম ভোগান্তির শিকার হন। এ দিন দু’চারটি বাস চলাচল করলেও যাতায়াতের জন্য জিপ ট্রেকার, টোটো, অটোর উপরেই নির্ভর করতে হয়েছে যাত্রীদের। বাস না পেয়ে রাইপুর যেতে সমস্যায় পড়া পরিমল মাহাতো বলেন, ‘‘সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত পাম্প মোড়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। কিন্তু বাস পাইনি।’’
ইঁদপুরের হিরাশোল গ্রামের গোবিন্দ তন্তুবায় বলেন, ‘‘বাঁকুড়া মেডিক্যালে ডাক্তার দেখানোর কথা ছিল। দীর্ঘ ক্ষণ ইঁদপুর বাস স্ট্যান্ডে অপেক্ষা করেও বাস না পেয়ে অগত্যা ছোট গাড়িতে ঝুলেই যেতে হয়েছে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর সভা থাকায় গ্রামাঞ্চলে এ দিন খুব কম মানুষই পথে বেরিয়েছিলেন। শিল্পাঞ্চল ও শহরগুলিতে যানযন্ত্রণা ছিল বেশি।
বাঁকুড়া জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অঞ্জন মিত্র বলেন, “এ দিন যাত্রীসংখ্যা খুব বেশি ছিল না। সব রুটে যা বাস ছিল, তাতে কারও অসুবিধা হয়নি। ৪০০ বাস সভায় গিয়েছিল।”