পুরুলিয়া শহরের বিভিন্ন এলাকায় দুয়ারে সরকারের হোডিং। নিজস্ব চিত্র
বাজারে বেরোতে গিয়ে রিংটোন শুনে মোবাইল ফোনের স্ক্রিন দেখে থমকে গেলেন এক যুবক— ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলিং’। ফোন ধরতেই অন্য প্রান্তে মুখ্যমন্ত্রীর কন্ঠস্বরে দুয়ারে সরকারের শিবিরে আসতে আহ্বান।
পঞ্চায়েত ভোটের মুখে এ বার আরও নিবিড় ভাবে দুয়ারে সরকারের শিবির করার জন্য বুথে বুথে শিবির শুরু হতে যাচ্ছে আজ, শনিবার থেকে। তা সফল করতে ইন্টারঅ্যাকটিভ ভয়েস রেকর্ডার সিস্টেমে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে বাসিন্দাদের কাছে। সেই ফোন পান কাশীপুরের যুবক সব্যসাচী মণ্ডল, সমিত পাল থেকে পুরুলিয়া জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক সিদ্ধার্থ চক্রবর্তীও।
পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বারে মোট শিবিরের সংখ্যা ৩,২২৬। যার মধ্যে মূল শিবির ২৭৯, অতিরিক্ত শিবিরের সংখ্যা ২২৩৫ এবং ভ্রাম্যমাণ শিবিরের সংখ্যা ৭১২। আবেদন গ্রহণ হবে ১-১০ এপ্রিল, পরিষেবা প্রদান হবে ১১-২০ এপ্রিল। জেলাশাসক বা জেলা প্রশাসনের কর্তারা ছাড়াও এই পর্বের দুয়ারে সরকার শিবিরগুলিতে নজরদারির জন্য দু’জন আইএএস পদমর্যাদার আধিকারিক থাকছেন। নিখিল নির্মল রঘুনাথপুর ও মানবাজার মহকুমা এবং সুরিন্দর গুপ্ত পুরুলিয়া ও ঝালদা মহকুমার দায়িত্বে থাকবেন।
জেলাশাসক রজত নন্দা বলেন, ‘‘এ বার প্রতিটি শিবিরে অভিযোগ বাক্স রাখা হবে। হেল্পলাইন চালু করা হচ্ছে। সমস্যা হলে বা কিছু জানার থাকলে ওই নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে।’’ জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, অতীতে আবেদন করেও যদি কেউ সুবিধা না পান, তাহলে তিনি আবেদনের প্রমাণ (ডকেট নম্বর) সহ অভিযোগ বক্সে আবেদন জানাতে পারবেন। এ বার শিবিরে ৩২টি প্রকল্পের সঙ্গে আরও চারটি পরিষেবা যুক্ত করা হয়েছে। সেগুলি হল: ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড, মেধাশ্রী, বাংলা কৃষি সেচ যোজনা ও বিধবা ভাতা।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, গত পাঁচ পর্বের কর্মসূচিতে জেলার ২০টি ব্লক ও তিনটি পুরএলাকায় মোট ১৪,৩৮২টি শিবির হয়েছে। সেখানে ৩০ লক্ষ ৮৬ হাজার ১৬৭ জন মানুষ এসেছেন। গড়ে প্রতি ব্লকে এক লক্ষ ৩৪ হাজার ১৮১ জন মানুষ শিবিরে হাজির হয়েছেন। ১৯ লক্ষ ৬৬ হাজার ৬৯ জন আবেদন করেছেন। গড়ে ব্লক প্রতি আবেদন জমা পড়েছে ৮৫ হাজার ৪৮১টি। এখনও পর্যন্ত ১৯ লক্ষ এক হাজার ৬৪৭ জনের আবেদন গৃহীত হয়েছে। বাতিল হয়েছে ৩৯,৪০২ জনের আবেদন। ২৫,০২০ জনের আবেদন যাচাইয়ের পর্যায়ে রয়েছে। আগের পাঁচটি শিবির থেকে বিভিন্ন প্রকল্পে পরিষেবা পেয়েছেন ১৮ লক্ষ ৮৯ হাজার ৩৯০ জন। সঠিক আবেদনের ভিত্তিতে এখনও পর্যন্ত ৯৭ শতাংশ আবেদনের নিষ্পত্তি হয়েছে।
সব থেকে বেশি প্রকল্পে মানুষ সুবিধা পেয়েছেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার (৫,১৫,২৩২), স্বাস্থ্যসাথী (৩,২৬,৯৭৬), খাদ্যসাথী (৩,০০,৩৪৪), বিনামূল্যে সামাজিক সুরক্ষা যোজনা (৩,২১,৪৯৬), ব্যাঙ্ক ও আধারের নম্বরের সংযোগ (১,৯৮,৭৭৬)।