মহম্মদবাজার ব্লক অফিসে চলছে ভোটের প্রস্তুতি। নজরদারির জন্য বসানো হচ্ছে ক্যামেরা। শুক্রবার। ছবি: পাপাই বাগদি
বৃহস্পতিবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পর শুক্রবার থেকেই মনোনয়নপত্রa জমা দেওয়া শুরু হয়েছে। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা না করেই মনোনয়নপত্র দাখিল করা শুরু করল বাম ও বিজেপি। কংগ্রেসের তরফেও কিছু গ্রাম পঞ্চায়েতে আসনের জন্য মনোনয়ন পত্র তোলা হয়েছে। প্রথম দিনেই প্রশাসনের বিরুদ্ধে অব্যবস্থার অভিযোগ তুলে সরব হল বিরোধীরা।
বিজেপির দাবি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসে ময়ূরেশ্বর ২ ব্লকে চরম হয়রানির মুখে পড়তে হয় তাদের কর্মীদের। বিজেপির অভিযোগ, প্রথমে আদালতের হলফনামা চাওয়া হয়। পরে বলা হয়, হলফনামার পরিবর্তে ১০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে প্রয়োজনীয় তথ্য লিখে দিলেই হবে। প্রথমে ১ পাতার ফর্ম দেওয়া হয়। পরে জেরক্স করে আরও দু’পাতার ফর্ম দেওয়া হয় বলে বিজেপির দাবি। বিজেপির ব্লক সদস্য সদানন্দ মণ্ডলের ক্ষোভ, ‘‘অফিস খোলার পর প্রার্থীদের নিয়ে এসে ৩টে ২০ মিনিট পর্যন্ত মনোনয়ন জমা করতে পারিনি।’’
নলহাটি ১ ব্লকে এ দিন বেলা ১১টা ৪০ বেজে গেলও মনোনয়নপত্র দেওয়ার জন্য কোনও আধিকারিক ছিল না বলে অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। বিডিও মধুমিতা ঘোষ বলেন, ‘‘মনোনয়নপত্র তোলার যে ডেস্ক ছিল তাতে কর্মী ছিলেন। সংবাদমাধ্যমে অভিযোগ করা হয়েছে। অফিসে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি।’’
সিউড়ি ১ ব্লকে প্রশাসন প্রস্তুত ছিল না, মনোনয়নপত্রই আসেনি বলে দাবি সিপিএমের। দলের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষের অভিযোগ, এ দিন নগরী এবং আলুন্দা পঞ্চায়েতের কয়েকটি আসনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রশাসন প্রস্তুত না থাকায় তাঁরা সেটা জমা করতে পারেননি বলে দাবি গৌতমের। বিডিও (সিউড়ি ১) শিবাশিস সরকার বলেন, ‘‘১৪টি ডিসিআর কাটা হয়েছে এবং মনোনয়নপত্র তোলা হয়েছে। কর্মী ও মনোনয়নপত্র না থাকলে সেটা সম্ভব হল কীভাবে?’’
বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বলেন, ‘‘গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত স্তরে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণার না হলেও এ দিন থেকেই আমরা পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির আসনের জন্য মনোনীত প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দেওয়ার কাজ শুরু করেছি। ময়ূরেশ্বর ১, ময়ূরেশ্বর ২ ব্লকে বেশ কয়েকটি মনোনয়ন জমা পড়েছে। ইলামবাজারে মনোনয়ন তোলার জন্য ডিসিআর কাটা হয়েছে।’’
সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘কংগ্রেস-সহ যাদের সঙ্গে লড়াইয়ের ময়দানে থাকব তাঁদের সকলকে নিয়ে শনিবার একটি বৈঠক আছে। সম্ভবত জেলা পরিষদের আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হবে ১১ তারিখ।’’ কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মিল্টন রশিদ বলছেন, ‘‘শনিবার বামেদের সঙ্গে বৈঠকের পরই কে কোথায় প্রার্থী হবেন সেটা সামনে আনতে পারব। তবে মনোনয়ন তোলার কাজ শুরু হয়েছে শুক্রবার থেকেই।’’ প্রশাসন সূত্রে খবর, মনোনয়নের প্রথম দিনে পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরে মোট ১৩০টি আসনে মনোনয়ন জমা পড়েছে। ১২১টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসন, ৭টি পঞ্চায়েত সমিতির আসন এবং দু’টি জেলাপরিষদ আসন রয়েছে। সবক’টিই বিরোধীদের, মূলত বিজেপির।
বিরোধীরা একটু এগিয়ে শুরু করলেও শাসক শিবিরের দাবি, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা না করে মনোনয়ন পত্র তোলা বা জমা দেওয়া হবে না। তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘তালিকা তৈরি। রাজ্য থেকে সিলমোহর পড়লেই ঘোষণা এবং মনোনয়ন জমার প্রক্রিয়া শুরু হবে।’’