ভরতপুরে পটচিত্র শিল্পীদের নবনির্মিত গ্রাম। ছবি: অভিজিৎ সিংহ
শুশুনিয়া পাহাড় ঘেঁষা ছাতনার পটচিত্রকরদের গ্রাম ভরতপুরকে আকর্ষনীয় করে তুলে ‘আদর্শ গ্রাম’ উপহার দিল রাজ্য সরকার। বুধবার ঝাড়গ্রাম থেকে ওই গ্রামের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে চিত্রকরদের জন্য গড়া বাড়িতে পাকা ছাদ ও শৌচালয় না থাকায় প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা।
ছাতনার বিডিও শিশুতোষ প্রামানিক অবশ্য বলেন, ‘‘শিল্পীদের নবনির্মিত প্রতিটি বাড়িতেই শৌচালয় গড়া হবে। তার জন্য ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ দেওয়া হয়েছে। গ্রাম্য পরিবেশ ফুটিয়ে তুলে ভরতপুরকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতেই টালির ছাদ গড়া হয়েছে। সেই ছাউনি আরও মজবুত করতে আধুনিক মানের
পিচচট দেওয়া হবে।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা খরচ করে ভরতপুরে ঢালাই রাস্তা, সৌরশক্তি চালিত পথবাতি ও পানীয় জলের সাব-মার্সিবল পাম্প বসানো হয়েছে। একটি পুকুর খনন করে স্নানের বাঁধানো ঘাট গড়া হয়েছে। শিল্পীদের জন্য ১৫টি বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। তিন কাঠা জমির উপরে গড়ে তোলা টালির ছাউনির নীল-সাদা রঙে রাঙানো প্রতিটি বাড়ির দেওয়ালে পটচিত্র শোভা পাচ্ছে।
তবে ভরতপুরের বাসিন্দা পটশিল্পী হেমন্ত চিত্রকর, তরুণ চিত্রকর, তারামণি চিত্রকর, রঘুমণি চিত্রকরেরা বলেন, “আমাদের পৈতৃক বাড়িতে শৌচালয় নেই। পাকা ছাদও নেই। প্রশাসন বাড়ি বানিয়ে দিলে এই সব সুবিধা পাব বলে আশা করেছিলাম। অথচ এখানেও দেখছি টালির ছাউনি, শৌচালয়ও নেই। ছাউনির বহু টালি ফাটা হওয়ায় জল পড়ছে। মেরামত না হলে বর্ষাকালে এখানে থাকা যাবে না। শৌচালয় না থাকায় সেই খোলা মাঠেই যেতে হবে।’’
ছাতনার বিজেপি বিধায়ক সত্যনারায়ণ মুখোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের নীতিই হল সকলের জন্য পাকা বাড়ি ও শৌচালয়ের ব্যবস্থা করা। সেখানে রাজ্য জেলা প্রশাসনের তৈরি করে দেওয়া বাড়িতে এই সব সুবিধা না থাকায় আমি অবাক।’’
ছাতনার বিডিও বলেন, “জেলাশাসকের উদ্যোগেই গ্রামটিকে ‘আদর্শ গ্রাম’ হিসেবে গড়ে তুলতে পরিকল্পনা নেওয়া হয়। আগামী দিনে আরও কিছু শিল্পীর পরিবারকেও বাড়ি বানিয়ে দেওয়া হবে। এখানে পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা করতে ‘হোম-স্টে’ গড়তে তিনটি পরিবারকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।”