এই সেই ঘাতক হনুমান। —নিজস্ব চিত্র।
দুই হনুমানের লড়াইয়ের মাঝে পড়ে মৃত্যু হল এক বৃদ্ধের। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি থানার লালপুর গ্রামে। মৃত বৃদ্ধের নাম কানাইলাল কুণ্ডু (৮২)। আক্রমণকারী হনুমানটিকে ঘুমপাড়ানি গুলি করে ধরেছেন বনকর্মীরা।
সম্প্রতি লালপুর গ্রামে দিন কয়েক আগে খাবারের খোঁজে হাজির হয়েছিল একটি হনুমান। প্রাথমিক ভাবে হনুমানটি শান্তই ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে ওই গ্রামে আরও একটি হনুমান উপস্থিত হয়। ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’কে দেখে সঙ্গে সঙ্গে বদলে যায় আগের হনুমানটির মেজাজ। ওই গ্রামে কার ‘অধিকার’ তা নিয়ে দুই হনুমানের মধ্যে লড়াই বেধে হয়ে যায়। তারা একে অপরকে আক্রমণ করে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ‘বালি’ এবং ‘সুগ্রীব’-এর দ্বন্দ্বযুদ্ধের মাঝে পড়ে যান কানাইলাল। তিনি গ্রামেরই এক বাসিন্দা। সেই সময় আচমকা একটি হনুমান কানাইলালের উপর আক্রমণ চালায়। রাস্তায় ফেলে দাঁত এবং নখের আঁচড়ে কানাইলালের বাঁ পা ক্ষতবিক্ষত করে দেয় হনুমানটি। গ্রামবাসীরা কোনওক্রমে হনুমানটিকে তাড়িয়ে কানাইলালকে উদ্ধার করে অমরকানন গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
হনুমানের হানায় বৃদ্ধের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকা জুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়। ভয়ে ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে দেন অনেকে। খবর পেয়ে গ্রামে উপস্থিত হন বন দফতরের কর্মী এবং আধিকারিকরা। বেশ কিছু ক্ষণের চেষ্টায় একটি হনুমানকে ঘুমপাড়ানি গুলি করে তাকে খাঁচাবন্দি করে বন দফতর।
হনুমানের এমন আক্রমণাত্মক মেজাজ দেখে চমকে গিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক গ্রামবাসীর কথায়, ‘‘দিন চারেক আগে হনুমানটি গ্রামে এসেছিল। প্রথমে তাকে এতটা আক্রমণাত্মক মনে হয়নি। আজ সকালে আচমকা দু’টি হনুমানের মারপিটের মাঝে ওই বৃদ্ধ পড়ে যাওয়ায় এই বিপত্তি ঘটল।’’ বাঁকুড়া উত্তর বনবিভাগের ডিএফও কল্যাণ রাইয়ের বক্তব্য, ‘‘সম্ভবত এই প্রথম বাঁকুড়ায় হনুমানের হানায় কোনও ব্যক্তির মৃত্যু হল। আমরা মৃতের পরিবারকে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আর্থিক সাহায্যের ব্যবস্থা করব। ওই হনুমানটি আবারও কাউকে আক্রমণ করতে পারে। তাই হনুমানটিকে খাঁচাবন্দি করা হয়েছে।’’