—ফাইল চিত্র।
সুযোগ এসেছিল ১২ বছর পর বিশ্বকাপ জয়ের। সুযোগ এসেছিল ২০ বছর আগের সেই দুঃস্বপ্নের রাতের প্রতিশোধ নেওয়ার। কত রোমাঞ্চ, কত আবেগ-উৎকণ্ঠা ছিল ফাইনাল ম্যাচকে ঘিরে। কিন্তু এ বারও সেই স্বপ্নভঙ্গ! রবিবার গুজরাতের আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে ২০ বছর আগের সেই রাতের স্মৃতিই ভারতবাসীকে ফিরিয়ে দিয়েছেন অজ়িরা। ফাইনালে রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিদের হার এ ভাবে মন থেকে মেনে নিতে পারেননি যুবক। ম্যাচ শেষে বাড়ি ফিরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হলেন তিনি। রবিবার রাতে বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ে ঘটনাটি ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বেলিয়াতোড়ের বাসিন্দা বছর তেইশের রাহুল লোহার আপাদমস্তক ক্রিকেটপ্রেমী বলেই পরিচিত। রবিবার বাড়ি লাগোয়া সিনেমা হলের মাঠে প্রোজেক্টর লাগিয়ে বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে খেলা দেখছিলেন রাহুল। ফাইনালে ভারত হেরে যাওয়ার রীতিমতো ভেঙে পড়েছিলেন। মাঠ থেকে সোজা বাড়ি ফিরে যান তিনি। এর পর রাত ১১টা নাগাদ ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। পরিবার সূত্রে খবর, রাহুলের ভাই বাড়ি ফিরে দেখেন, দাদার দেহ অ্যাজবেস্টসের চাল থেকে ঝুলছে। তড়িঘড়ি রাহুলকে বেলিয়াতোড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
পরিবারের লোকেরা জানান, রাহুল ছোট থেকেই ক্রিকেটপ্রেমী। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ থেকে কোহলিদের জন্য গলা ফাটাচ্ছিলেন তিনি। মৃতের জামাইবাবু উত্তম শুর বলেন, ‘‘ভারতের হার কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারছিল না ও। ভারতের হার যখন প্রায় পাকা হয়ে গিয়েছে, তখন থেকেই অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছিল। আমাদের মনে হয়, ওই জন্যই আত্মহত্যা করেছে ও।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার সকালে পুলিশ মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে পাঠিয়েছে। ভারতের হারের কারণেই মানসিক অবসাদ না কি এই আত্মহত্যার পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
রবিবার মুর্শিদাবাদেও ভারতের ম্যাচ দেখতে দেখতে অসুস্থ হয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। বেলডাঙায় নিজের বাড়িতেই পরিবারের লোকেদের সঙ্গে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার ফাইনাল ম্যাচ দেখছিলেন ষাটোর্ধ্ব সুকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। খেলা দেখতে দেখতেই অসুস্থ হয়ে পড়ে মৃত্যু হয় তাঁর। পরিবার সূত্রে খবর, ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা আউট হওয়ার পর থেকেই ঘামতে শুরু করেছিলেন বৃদ্ধ। তার পর ভীষণ ভাবে অস্থির হয়ে পড়ছিলেন একের পর এক উইকেট পড়তে থাকায়। বিরাট আউট হতেই তিনি উঠে ছাদে চলে যান। সেখানেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে প্রথমে বেলডাঙা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা চলাকালীনই মৃত্যু হয় সুকুমারের।