কাজল পোড়েল। —নিজস্ব চিত্র।
কলেজে পড়াকালীন রাজনীতিতে হাতেখড়ি। পরে, সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দিয়ে প্রথম বার ভোটে দাঁড়ানো এবং জিতে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির পদে বসা। বাঁকুড়ার বড়জোড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের কাজল পোড়েল এ নিয়ে টানা তিন বার দায়িত্বে এলেন। দায়িত্ব, ক্ষমতা বাড়লেও তার প্রভাব পড়তে দেননি জীবনযাত্রায়, দাবি কাজলের।
স্নাতক কাজল এক সময়ে টিউশন পড়িয়েছেন। স্বামী ব্যবসায়ী। দুই মেয়ের এক জন বিবাহিত, অন্য জন নার্সিংয়ের ছাত্রী। কাজল বলেন, “কলেজে অল্পবিস্তর রাজনীতি করতাম। পরে তৃণমূলে যোগ দিই। ২০১৩ সালে প্রথম ভোটে দাঁড়াই। জিতেই সভাপতি। গুরুদায়িত্ব কাঁধে চাপায় শুরুতে একটু বিচলিত হলেও সময়, অভিজ্ঞতা পরিণত করেছে।”
যদিও পদ-ক্ষমতা, এ সবের চেয়ে জনসংযোগকে গুরুত্ব দিতে চান কাজল। দৈনন্দিন হাট-বাজার করা থেকে পাড়ার কলে জল আনতে যাওয়া, সবই করেন নিজে। কাজলের কথায়, “এতে জনসংযোগ ঠিক থাকে। অনেকে নানা অসুবিধার কথা জানাতে পারেন। বিশেষ করে মহিলারা তাঁদের সমস্যার কথা অকপটে বলতে পারেন। সাধ্যমতো সমাধানের চেষ্টা করি।” এলাকায় কান পাতলেও শোনা যায়, ক্ষমতাসীন হলেও জীবনযাত্রায় বড় বদল আসেনি তাঁর। বিরোধীদের তবে দাবি, নিজের না হলেও পরিজনদের একাংশের আর্থিক হাল উন্নত হয়েছে।
কাজলের মতে, আগের চেয়ে মহিলাদের রাজনীতিতে আসার প্রবণতা বেড়েছে। সব চেয়ে বড় কথা, তাঁরা এখন আর পুরুষ দ্বারা পরিচালিত হন না। নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেন। দলের নানা বৈঠকে মহিলা প্রতিনিধিরা স্বাধীন ভাবে মতামত দেন। মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ হওয়া নিয়ে তিনি বলেন, “দীর্ঘ দিনের দাবি পূরণ হয়েছে। তবে তা দ্রুত কার্যকর করা দরকার। তৃণমূল আগে থেকেই মহিলাদের সামনে আনতে উদ্যোগী হয়েছে বলেই আমরা এই জায়গায় পৌঁছতে পেরেছি।” তবে জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে কোথাও যেন সাংসারিক দায়িত্ব পালনে খামতি থাকার আক্ষেপ রয়ে গিয়েছে। কাজল বলেন, “সংসার সামলাতে শাশুড়ির বড় ভূমিকা রয়েছে। আর কাজের প্রয়োজনে ইচ্ছা থাকলেও সব পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া হয় না। ছোট মেয়েকেও একটু সময় দিতে পারলে ভাল হত।” (চলবে)