খয়রাশোল। নিজস্ব চিত্র।
বাজির দাপট ছিল না। তবে স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করেই জেলা জুড়ে পালিত হল ছট পুজো। অধিকাংশের মুখেই দেখা গেল না মাস্ক। মানা হয়নি দূরত্ব বিধিও। খুব কম জায়গাতেই এমন ছবির ব্যতিক্রম দেখা গিয়েছে।
শুক্রবার ছিল ছটপুজো৷ সেই উপলক্ষে এ দিন বিকেল থেকে সিউড়ির বড় কালীবাড়ির পুকুর, সাজানোপল্লির পুকুর, হাটজনবাজারের ফার্মের পুকুর-সহ শহরের চার জায়গায় ভিড় জমাতে শুরু করেন পূণ্যার্থীরা। ছটপুজোর প্রস্তুতি এবং আদালত নির্দেশ কতটা পালন করা হচ্ছে তা দেখার জন্য এ দিন সকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুবিমল পাল-সহ পুলিশ আধিকারিকরা সিউড়ি শহরের ঘাটগুলি পরিদর্শন করে আসেন। স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য অনুরোধও করা হয়। বাস্তবে অবশ্য সেই নির্দেশ পালনের চিহ্ন দেখা যায়নি। অভিযোগ, পূণ্যার্থীদের অধিকাংশদের মুখে ছিল না মাস্ক। এমনকি দূরত্ববিধি না মেনেই চলল পুজো। পুলিশ প্রহরা থাকলেও ছবিটা বদলায়নি।
ফি বছর ছটের দিন পশ্চিম বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বর ও খয়রাশোলের ভিমগড়ের মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া অজয় নদে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। পাণ্ডবেশ্বরের দিকের থেকে ছটপুজোর ভিড়টা বেশি হয় খয়রাশোলের দিকে। অসংখ্য ডালায় সাজানো থাকে অর্ঘ্য, প্রদীপ, নানা ফল। করোনা আবহে সেই ছবিতে তেমন কোনও তফাত নজরে আসেনি। শুধু বাজি পোড়ানোর ধোঁয়া ও আওয়াজ ছিল না।
অজয়ের ছটপুজো যাতে ঠিক ভাবে হয়, তার নজরদারিতে ২২ বছর ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে পাণ্ডবেশ্বর ছটপুজো সর্বজনীন কমিটি। কমিটির পক্ষে সত্যেন্দ্রপ্রসাদ, সম্পাদক নরেশ যাদবরা বলেন, ‘‘অন্তত তিন হাজার মানুষ এসেছিলেন। করোনা বিধি মেনে চলার পাশাপাশি আদালতের নির্দেশ মানার জন্য প্রত্যেকের কাছে আহ্বান জানানো হয়েছিল। বাজি ফাটেনি। তবে সবক্ষেত্রে করোনা বিধি মানা গিয়েছে, এটা বলা যাবে না।’’
একই চিত্র ছিল বোলপুরেও। সেখানেও পুজোতে স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়নি বলে অভিযোগ। এ দিন বোলপুরের কুমোরপুকুর, কালীপুকুর, শুঁড়িপুকুর থেকে শুরু করে সব জায়গাতেই একই অবস্থা ছিল। স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে জমায়েত হয়। অধিকাংশ মানুষের মুখে মাস্ক ছিল না। রামপুরহাট শহরের গাঁধীপার্কের দিঘি, রেলের পুকুর, চাঁদামারি পুকুর এবং চালধোয়ানী পুকুরে ছট পুজো হয়েছে। অভিযোগ, সেখানেও অধিংশের মুখে মাস্ক ছিল না এবং দূরত্ববিধি মানা হয়নি। রামপুরহাট পুরভার পক্ষ থেকে আদালতের নির্দেশ পালনের জন্য প্রচার করা হলেও বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি বলে জানাচ্ছেন বাসিন্দারা।
ছবিটা কিছুটা আলাদা ছিল নলহাটি ও সাঁইথিয়ায়। সাঁইথিয়া পুরসভার এক, দুই, পাঁচ ও সাত নম্বর ওয়ার্ডে চারটি ঘাটে ছটপুজো হয়। পুজো উপলক্ষে পুরসভার পক্ষ থেকে ঘাটগুলিতে জীবাণুনাশ
করা হয়েছিল। সাঁইথিয়া ও নলহাটিতে আদালতের নির্দেশ কিছুটা মানা হয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবি। সিউড়ি, বোলপুর এবং রামপুরহাট তিন মহকুমা শহরে কাউকে আতশবাজি ফাটাতেও দেখা যায় নি। সামান্য পরিমান শব্দবাজির আওয়াজ শোনা গেলেও তা ছিল নামমাত্র।