দীর্ঘদিনের দাবি পূরণের পরে থানার সামনে মিষ্টি বিলি। নিজস্ব চিত্র।
আবেদন নিবেদন থেকে ধারাবাহিক আন্দোলন। পুলিশ ফাঁড়িকে থানায় উন্নীত করার দাবিতে দীর্ঘদিন সরব হয়েছেন কীর্ণাহারের বাসিন্দারা। ‘হচ্ছে-হবে’ আশ্বাস শুনতে শুনতে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। অবশেষে পূরণ হল সেই দাবি। কীর্ণাহার পুলিশ ফাঁড়িকে স্বতন্ত্র থানা হিসাবে স্বীকৃতি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার দুর্গাপুর থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে থানার উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এলাকায় তাই খুশির হাওয়া।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পঁচিশেক আগে থানা নির্মাণ-সহ এলাকার উন্নয়নের জন্য প্রায় ১৭ বিঘে জমি দান করেছিলেন স্থানীয় শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষজন। সেই জমিতে একটি মার্কেট, পুলিশ ফাঁড়ি এবং আনাজের বাজার নির্মিত হলেও থানার ব্যাপারটি আশ্বাসের পর্যায়েই থেকে যায়। থানার দাবিতে এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতি এবং নাগরিক সমিতি ধারাবাহিক আন্দোলন শুরু করে। সেই দাবিও অবহেলিত থেকে গিয়েছিল বলে অভিযোগ।
অথচ ভৌগোলিক অবস্থানের বিচারে কীর্ণাহারে থানার প্রয়োজনীতা রয়েছে বলে জেলা পুলিশের কর্তারাই আড়ালে স্বীকার করেন। কীর্ণাহার থেকে নানুর থানার দূরত্ব প্রায় ৮ কিলোমিটার। কীর্ণাহারের অদূরেই বর্ধমান এবং মুর্শিদাবাদ জেলার সংযোগস্থল ফুটিসাঁকো। এক সময় অপরাধপ্রবণএলাকা হিসেবে পরিচিত ছিল ফুটিসাঁকো। বর্ধমানের খাগড়াগড় বিস্ফোরণ-কাণ্ডের পরে কীর্ণাহারে থানার দাবি আরও জোরদার হয়। ওই বিস্ফোরণ-কাণ্ডে জড়িত বেশ কয়েক জনের বাড়ি কীর্ণাহার সন্নিহিত গ্রামে।
মঙ্গলবার রাতেই খুশির খবরটা পৌঁছয় এলাকায়। এ দিন সেই আনন্দে মিষ্টিমুখ, আবির খেলা-সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মেতে ওঠেন স্থানীয় বাসিন্দারা। নাগরিক সমিতির সভাপতি সুবীর মণ্ডল, সম্পাদক অরুণ রায়, ব্যবসায়ী সমিতির তৎকালীন সম্পাদক আশিস দে , বর্তমান সম্পাদক তপন দে বলেন, ‘‘শেষ পর্যন্ত আমাদের দাবি পূরণ হওয়ায় আমরা খুব খুশি হয়েছি।’’ জমিদাতা বিধু রায় , বটকৃষ্ণ দত্তদের কথায়, ‘‘আমাদের দান করা জমি যথাযথ কাজে লাগতে চলেছে বলে আমরাও খুব খুশি।’’
পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, নানুর ব্লকের চারটি এবং লাভপুর ব্লকে দু’টি পঞ্চায়েত নিয়ে হবে কীর্ণাহার থানা। থানা উদ্বোধন উপলক্ষে কীর্ণাহারে হাজির ছিলেন বীরভূমের পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী, এসডিপিও (বোলপুর) অভিষেক রায়, মহকুমাশাসক (বোলপুর) অয়ন নাথ , বিডিও (নানুর) শৌভিক ঘোষাল, বিধায়ক বিধান মাঝি প্রমুখ। পুলিশ সুপার জানান, কীর্ণাহারে দ্রুত পূর্ণাঙ্গ থানার পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে।