পুরুলিয়ার জয়পুরের আঘরপুর গ্রামে যাওয়ার পথে পুলিশের বাধার মুখে নওশাদ সিদ্দিকী। —নিজস্ব চিত্র।
এসেছিলেন শিল্পতালুকের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ধৃত মহিলাদের পরিজনদের সঙ্গে দেখা করতে। তবে পুলিশি বাধার মুখে পুরুলিয়ার জয়পুরের আঘরপুর গ্রামে না ঢুকেই ফিরতে হল ভাঙড়ের বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকীকে।
বাধার মুখে আইএসএফের বিধায়ক বলে গেলেন, ‘‘এখানে হয়তো পুলিশ আমাকে আটকাতে পারছে। তবে বিধানসভার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী আমার মুখের কথা আটকাতে পারবেন না। মুখ্যমন্ত্রীকে জবাব দিতে হবে। কারণ উনি নিজেভূমি দফতরের মন্ত্রী।’’
আঘরপুরের প্রস্তাবিত শিল্পতালুকে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে গত ৪ নভেম্বর ১৩ জন মহিলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের সঙ্গে তিন দুধের শিশুও জেল হেফাজতে রয়েছে। এ দিন বেলা দেড়টা নাগাদ নওসাদের গাড়ি চাষমোড়ের অদূরে পুরুলিয়া-বোকারো (৩২ নম্বর জাতীয় সড়ক) ছেড়ে আঘরপুরের দিকে মোড় নিতেই পুলিশ পথ আটকায়। রাস্তায় ব্যরিকেড করে একাধিক পদস্থ পুলিশকর্তা-সহ পুলিশকর্মীরা ছিলেন।
তবে পুলিশের তরফে বিধায়ককে প্রথমে ফিরে যেতে বলা হয়নি। পরে নওসাদ দায়িত্বপ্রাপ্তের সঙ্গে কথা বলতে চান। তখন পুলিশের কেউ বিধায়ককে নেমে আসতে বললে ক্ষুব্ধ হন নওসাদ। কেন তাঁকে আটকানো হয়েছে, তাও জানতে চান বিধায়ক।
এক পুলিশ কর্তা তখন বলেন, যাওয়ার অনুমতি নেই। গ্রামে আইনশৃঙ্খলা জনিত যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা বাড়তে পারে। নওসাদ জানান, গ্রামে কোনও সভা নেই। তাও পুলিশ পথ ছাড়েনি।
বিধায়ক এরপর গাড়ি থেকে নেমে বলেন, ‘‘কোন আইনের বলে আমাকে আটকানো হচ্ছে তা লিখিত ভাবে দিতে হবে। আমাকে গ্রেফতার করুন।’’
এরপরে নওসাদ রাস্তার পাশে গামছা বিছিয়ে বসে পড়েন। পুলিশও রাস্তা আটকে রাখে।শেষে আঘরপুর থেকে বেশ কয়েকজন এসে নওসাদের সঙ্গে দেখা করেন। বিকেল গড়ায়।
পরে নওসাদ বলেন, ‘‘আমি গ্রামে গিয়েই মানুষের সঙ্গে কথা বলতাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় প্রশাসন আমার পথ আটকে দিয়েছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘যেখানে প্রকল্প হচ্ছে সেখানে মন্দির রয়েছে, শ্মশান রয়েছে, বছরে উৎসব হয়। প্রস্তাব ছিল, জায়গাটা যেন কিছুটা ছেড়ে প্রকল্প গড়া হয়। কিন্তু মহিলাদের কী অবস্থায় গ্রেফতার করা হয়েছে সকলেই জানেন।’’ এলাকা ছাড়ার আগে নওসাদ জানিয়ে যান, "আজ আমি ফিরে যাচ্ছি। পরের দিন আইনি অনুমতি নিয়েই আসব।’’
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক শান্তিরাম মাহাতোর দাবি, ‘‘নওসাদ সিদ্দিকী যে বিজেপির হয়ে কাজ করছেন সেটা পরিষ্কার।’’
বিজেপির জেলা সভাপতি বিবেক রঙ্গার পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘ওই গ্রামে তো ১৪৪ ধারা নেই। তাহলে পুলিশ কেনই বা আটকাবে? আর এর মধ্যে বিজেপি কোথা থেকে আসে! আসলে সবেতেই তৃণমুল বিজেপির জুজু দেখছে।’’