ফাইল চিত্র।
জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এক যুবক। শুক্রবারই তাঁর বাড়ি ফেরার কথা ছিল। আচমকাই পরিবারের কাছে খবর এল, হাসপাতালে বাইরে কিছুটা দূরে একটি নির্মীয়মাণ লজের ভিতর থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়েছে। হাতে স্যালাইনের সূচ ফোটানো। মাথায় ও পায়ে আঘাতে চিহ্ন। পুরুলিয়ার বাঘমুন্ডি থানা এলাকায় বছর সাতাশের ওই যুবকের রহস্যমৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। তদন্তও শুরু হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃত যুবকের নাম সোমনাথ মুর্মু। বাঘমুন্ডি থানার মাতকুমডি গ্রামে তাঁর বাড়ি। মৃতের পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, জ্বর হওয়ায় গত ১৪ জুন সন্ধ্যায় অযোধ্যা হিল প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছিল সোমনাথকে। তার পর থেকে সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল। সুস্থও হয়ে উঠেছিলেন। শুক্রবারই তাঁর হাসপাতাল থেকে ছুটি পাওয়ার কথা ছিল। সোমনাথের দাদা মঙ্গল মুর্মু বলেন, ‘‘গত কাল (বৃহস্পতিবার) বিকেলেই আমার ভাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয়। ও জানিয়েছিল, ওর একটাই ইনজেকশন নেওয়া বাকি ছিল। আজ (শুক্রবার) সকালে সেটা নিয়েই বাড়ি ফিরবে।’’
সোমনাথের বাড়িতে স্ত্রী সুরমনি ছাড়াও তাঁদের বছর তিনেকের ছেলে রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে স্বামীকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন সুরমনি। খাবার নিয়ে গিয়েছিলেন মঙ্গলও। সুরমনি বলেন, ‘‘গত কাল (বৃহস্পতিবার) আমি হাসপাতালে গিয়েছিলাম। ওই সময় ওঁর কোন বন্ধু ডেকেছে বলে বাইরে বেরিয়ে গিয়েছিল। আসছে না দেখে আমিও চলে এসেছিলাম। এখন মনে হচ্ছে, আমার তখনই নার্সকে জানানো উচিত ছিল। আমার ভুলেই এই ঘটনা ঘটে গেল।’’ মঙ্গলও জানান, হাসপাতালে সোমনাথের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘সুরমনি বলল, ভাই সুস্থই আছে। তাই খাবার দিয়ে ফিরে এসেছিলাম। আজ (শুক্রবার) সকালে খবর পেলাম, ভাই লজে পড়ে রয়েছে।’’ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নার্স কবিতা পালও বলেন, ‘‘আমি রাত ৯টা নাগাদ গিয়েছিলাম। তখন পেশেন্ট ছিল। বাড়ির লোকও ছিল। বাড়ির লোককে বলেছিলাম, কোনও সমস্যা হলে কাউকে খবর দিতে।’’
এর পর শুক্রবার স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে কিছুটা দূরে একটি নির্মীয়মাণ লজের ভিতর থেকে উদ্ধার হয় সোমনাথের দেহ। স্থানীয়েরাই পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তদন্তকারীদের বক্তব্য, দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তার রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কিছুই বলা সম্ভব নয়।