মৃত যুবক সোমনাথ ঘোষের (বাঁ দিকে) শেষকৃত্যের বন্দোবস্ত করছেন মুসলিম গ্রামবাসীরা (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
অশান্ত বাংলাদেশ। সংখ্যালঘুদের উপর হামলার নানা অভিযোগ প্রকাশ্যে আসছে। কোথাও সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ভাঙচুর, কোথাও ধর্মীয় স্থানে হামলার অভিযোগও উঠছে। তার প্রতিবাদে সরব এ পার বাংলার অনেকেই। সেই আবহে বীরভূমের নানুরে সম্প্রীতির নজির গড়লেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা। মৃত হিন্দু যুবকের সৎকারে এগিয়ে এলেন তাঁরা। চাঁদা তুলে শেষকৃত্যের বন্দোবস্ত করলেন। ও পার বাংলায় চলমান অশান্তির মাঝে তাঁরা আরও এক বার প্রমাণ করলেন কবি চণ্ডীদাসের সেই উক্তি, ‘সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই!’
নানুর থেকে কিছুটা দূরে আগরতর গ্রামে কবি চণ্ডীদাসের ভিটে। সেই গ্রামে মূলত মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষই বেশি বসবাস করেন। সেখানকারই বাসিন্দা সোমনাথ হাজরা। বছর কুড়ির যুবক শনিবার রাতে কীর্ণাহার থানার বলরামপুর গ্রামে বন্ধুর বাড়িতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু মিরাটির কাছে পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন তিনি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। গ্রামে সোমনাথের পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভাল নয়। পুত্রের শেষকৃত্য করার মতো সামর্থ্যও ছিল না তাদের।
সোমনাথের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে আগরতর গ্রামে। গ্রামের ছেলের সৎকারের জন্য এগিয়ে আসেন গ্রামের মুসলিমরা। চাঁদা তুলে সৎকারের সমস্ত রকম ব্যবস্থা করেন তাঁরা। নিজেদের হাতে খাটিয়া তৈরি করে, তাতে চাপিয়েই সোমনাথকে শ্মশানে নিয়ে যান গ্রামের মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকেরাই।