—ফাইল চিত্র।
জিয়াগঞ্জে নিজের বাড়িতে সপরিবার শিক্ষক খুনের ঘটনার কিনারা করা গিয়েছে বলে মঙ্গলবার দাবি করেছে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ। উৎপল বেহেরা নামে এক রাজমিস্ত্রিই শিক্ষক বন্ধু বন্ধুপ্রকাশ পাল, তাঁর স্ত্রী বিউটি এবং ছেলে অঙ্গনকে খুন করেছে বলে দাবি পুলিশের। তবে, রামপুরহাট থানার সিউড়া গ্রামে বন্ধুপ্রকাশের শ্বশুরবাড়ির সদস্যেরা পুলিশি তদন্তে সন্তুষ্ট নন। তাঁরা সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন।
বন্ধুপ্রকাশের শ্যালক সাক্ষীগোপাল মণ্ডল এ দিন দাবি করেছেন, ‘‘সকালে জিয়াগঞ্জ থানার অফিসার ইন-চার্জকে তদন্তের গতিপ্রকৃতি সম্বন্ধে জানার জন্য ফোন করেছিলাম। ফোন বেজে গেলেও তিনি ধরেননি। পরে টিভি-তে খবর দেখে জানতে পারি, এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিশ্বাস করতে পারিনি। এর পরে বন্ধুপ্রকাশের মামাতো ভাইকে আমি ফোন করি। তাঁর কাছ থেকে বিশদে জানতে পারি।’’
মুর্শিদাবাদ পুলিশের দাবি, বিজয়া দশমীর সকালে স্রেফ পাঁচ মিনিটের মধ্যে সপরিবার বন্ধুপ্রকাশকে খুন করা হয়। পুলিশের আরও দাবি, জেরার মুখে উৎপল তাদের জানিয়েছে, বন্ধুপ্রকাশের মাধ্যমে সে একটা বিমা করিয়েছিল। বাৎসরিক প্রিমিয়াম ২৪ হাজার টাকার কিছু বেশি। প্রথম বারের কিস্তির টাকার রসিদ দিলেও, দ্বিতীয় বার দেওয়া টাকার কোনও রসিদ দিচ্ছিলেন না বন্ধুপ্রকাশ।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এই নিয়ে দু’জনের মধ্যে টানাপড়েন, তর্কাতর্কি চলছিল। উৎপলের সন্দেহ হয়, এই ২৪ হাজার টাকা বন্ধুপ্রকাশ জমাই দেননি। যদিও নিহত বিউটি পালের দাদা সাক্ষীগোপাল মনে করেন, মাত্র ৫ মিনিটে ২৪ হাজার টাকার জন্য এমন নৃশংস কাণ্ড কেউ ঘটাতে পারে না। ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে বলেই আমাদের ধারণা।’’—বলছেন সাক্ষীগোপাল।
বিউটির বাপের বাড়ির পরিবারের আরও অনেকে পুলিশি তদন্তে সন্তোষ প্রকাশ করেননি। সাক্ষীগোপাল
বলেন, ‘‘পুলিশ ঠিকঠাক তদন্ত করলে ঘটনার সঙ্গে কে প্রকৃত জড়িত, তা বের করতে পারত।’’
এই সূত্রেই আবার উঠে এসেছে বন্ধুপ্রকাশের বন্ধু তথা রামপুরহাটের বাসিন্দা এক যুবকের নাম। ওই যুবকের সঙ্গেই বন্ধুপ্রকাশের আর্থিক লেনদেন বেশি ছিল বলে পুলিশও তদন্তে জানতে পেরেছে। এই বিষয়ে সাক্ষীগোপালের দাবি, ‘‘ওকে যেন পুলিশ না ছেড়ে দেয়।’’ পুলিশ বা সিআইডি তদন্তের প্রতি তাঁদের
আস্থা নেই জানিয়ে বিউটির বাপের বাড়ির লোকজন সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন।