রণবীরের স্ত্রীর নামে খুনের মামলা

পুলিশ সূত্রের খবর, আট-ন’বছর আগে রণবীর কুমকুমকে বিয়ে করেন। তাঁদের একটি চার বছরের মেয়ে আছে। পুলিশের দাবি, সম্প্রতি তাঁদের দাম্পত্য সম্পর্কের কিছুটা অবনতি হয়েছিল। দোতলা বাড়ির এক তলার একটি ঘরে থাকতেন রণবীর। অন্য ঘরটি এক ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। দোতলায় মেয়েকে নিয়ে থাকতেন কুমকুম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:০০
Share:

এই ঘরেই মেলে রণবীর মিত্র (ইনসেটে)-এর দেহ। ছবি: সুজিত মাহাতো

পুরুলিয়া শহরের ভাটবাঁধের গুলিবিদ্ধ যুবকের মৃত্যুর তদন্তে নেমে বেশ কিছু জায়গায় খটকা লাগছিল তদন্তকারীদের। রণবীর মিত্র নামে পুরুলিয়া পুলিশ সুপারের অফিসের ওই করণিক পিস্তল দিয়ে নিজেই মাথায় গুলি করে আত্মঘাতী হয়েছেন কি না, তা নিয়ে গোড়াতেই সংশয়ে ছিলেন তদন্তকারীরা। এ বার নিহতের পিসি পুরুলিয়া সদর থানায় রণবীরকে খুন করার অভিযোগ দায়ের করায় হত্যা-তদন্ত অন্যমাত্রা পেল। বারাসতের যশোর রোডের চাঁপাডালি এলাকার বাসিন্দা কল্পনা রায় ভাইপো রণবীরকে তাঁর স্ত্রী কুমকুম মিত্র পরিকল্পিত ভাবে খুন করেছে বলে অভিযোগ দায়ের করলেন।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, শুক্রবার তিনি খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস সিলভামুরগান বলেন, ‘‘রণবীর মিত্র নামের ওই যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় তাঁরই এক আত্মীয়া খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।”

গত বৃহস্পতিবার সকালে পুরুলিয়া শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভাটবাঁধ পাড়ায় নিজের বাড়ির এক তলার একটি ঘর থেকে উদ্ধার হয় বছর আঠাশের ওই যুবকের গুলিবিদ্ধ দেহ। রণবীরের বাবা রবিলোচন মিত্র ছিলেন বাঁকুড়ার সারেঙ্গা থানার ওসি। ২০১০ সালে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযানে গিয়ে গুলিতে মৃত্যু হয় তাঁর। রণবীর তখন নাবালক। পরে সাবালক হওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী তিনি জেলা পুলিশ সুপারের অফিসে করণিকের চাকরি পান। কয়েক বছর আগে মৃত্যু হয় তাঁর মায়ের।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, আট-ন’বছর আগে রণবীর কুমকুমকে বিয়ে করেন। তাঁদের একটি চার বছরের মেয়ে আছে। পুলিশের দাবি, সম্প্রতি তাঁদের দাম্পত্য সম্পর্কের কিছুটা অবনতি হয়েছিল। দোতলা বাড়ির এক তলার একটি ঘরে থাকতেন রণবীর। অন্য ঘরটি এক ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। দোতলায় মেয়েকে নিয়ে থাকতেন কুমকুম।

তদন্তের গোড়াতেই বেশ কিছু বিষয়ে খটকা জাগে তদন্তকারীদের মনে। তারপরে ময়না-তদন্তের পরে প্রাথমিক ভাবে কিছু তথ্য জোগাড়ের পরে বিষয়টি আত্মহত্যার বলে কিছুতেই মেলাতে পারছিলেন না তাঁরা। সেই সময়ে রণবীরের পিসি কল্পনাদেবী খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ সূত্রে খবর, কল্পনাদেবীর অভিযোগ, কুমকুম তাঁর স্বামী রণবীরের বাড়ি, গয়না ও টাকা আত্মসাৎ করার জন্য কয়েকজনকে নিয়ে গুলি করে খুন করে তথ্য প্রমাণ লোপাট করেছেন। তবে এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে বিশদে কিছু জানাতে চাননি কল্পনাদেবী। রবিবার তাঁকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘বাইরে কিছু বলব না।’’ তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কুমকুম। তিনি দাবি করেন, ‘‘রণবীরের আত্মীয়া আমার বিরুদ্ধে কেন অভিযোগ করেছেন জানি না। আমি নিজেও চাই স্বামীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করুক পুলিশ।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement