যুযুধান দু’পক্ষ। নিজস্ব চিত্র
ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে সৌরবিদ্যুৎ-চালিত পাম্প ও নলকূপ তৈরির প্রকল্প নিয়ে প্রকাশ্যে বচসায় জড়ালেন রঘুনাথপুরের বিজেপি বিধায়ক বিবেকানন্দ বাউরি ও রঘুনাথপুর পুরসভার তৃণমূলের পুরপ্রতিনিধি প্রণব দেওঘরিয়া। শুক্রবার দুপুরে রঘুনাথপুর ১ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরের ঘটনা।
বিধায়কের অভিযোগ, ‘‘উন্নয়নমূলক কাজে পরিকল্পিত ভাবে বাধা তৈরি করছে তৃণমূল।” পাল্টা প্রণবের দাবি, “পরিকল্পনাবিহীন ভাবে কাজ করা হচ্ছে। সরকারি অর্থ নয়ছয় হচ্ছে দেখে কাজ সম্পর্কে কিছু তথ্য জানাতে চেয়েছিলাম। সদুত্তর না দিয়ে বিধায়ক উল্টে হম্বিতম্বি করেছেন।”
সূত্রের খবর, মাস তিনেক আগে রঘুনাথপুর ১ ব্লকের রোগীকল্যাণ সমিতির সভায় ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পানীয় জলের সমস্যার কথা জানতে পারেন বিধায়ক। তাঁর দাবি, এরপরেই বিধায়কের এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সৌরবিদ্যুৎ-চালিত পাম্প ও গভীর নলকূপ তৈরির প্রস্তাব জেলা পরিকল্পনা দফতরে দেন। প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কাজ শুরু করেছে রঘুনাথপুর ১ ব্লক প্রশাসন।
প্রণব জানান, ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ১ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে, যেখানকার পুর-প্রতিনিধি তিনি। তাই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কারা ওই কাজ করছে, সে বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন। তাঁর দাবি, নির্মাণকারী সংস্থার কাছে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাত্র তিনশো ফুট গভীর নলকূপ খোঁড়া হচ্ছে বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে। প্রণব বলেন, “পুর-এলাকায় জলের স্তর অনেকটাই নীচে। গরমে তা আরও নীচে নেমে যায়। পুরসভাও ১৩টি ওয়ার্ডে একই প্রকল্প তৈরি করছে। সেখানে ছশো-সাতশো ফুট খোঁড়া হচ্ছে বলেই নির্মাণকারী সংস্থার কাছে কাজের খতিয়ান দেখতে চেয়েছিলাম।”
স্থানীয়দের দাবি, এরই মধ্যে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বিধায়ক। দু’জনের মধ্যে তুমুল বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। খবর পেয়ে তৃণমূলের আরও দুই কাউন্সিলর, মৃত্যুঞ্জয় পরামানিক ও আনন্দ বাউরিও সেখানে যান। বিধায়কের অভিযোগ, “ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পানীয় জলের সমস্যা তৃণমূল মেটাতে পারেনি। আমি মেটাচ্ছি দেখে পরিকল্পিত ভাবে কাজে বাধা তৈরি করছেন তৃণমূলের পুর-প্রতিনিধিরা।” তাঁর আরও দাবি, ‘‘ওই প্রকল্পের কাজ পুরসভার মাধ্যমে করা হলে সেখান থেকে কাটমানি খেত তৃণমূল। সেটা হয়নি দেখে গাত্রদাহ হচ্ছে ওঁদের।” পাল্টা প্রণব বলেন, “কাটমানির অভিযোগ ওঁর মুখে মানায় না। ওঁর বিরুদ্ধেই তো বিস্তর অভিযোগ দলের কর্মীরাই বিভিন্ন সময়ে তুলেছেন।” শেষে ব্লক প্রশাসনের দুই কর্মী ঘটনাস্থলে যাওয়ার পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়।