আগের তুলনায় তাঁদের কাছ থেকে বহু গুণ বেশি কর নেওয়া হচ্ছে, এমনই অভিযোগ তুলে সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করলেন বোলপুর ও শান্তিনিকেতনের লজ ও হোটেল মালিকেরা।
তাঁদের আইনজীবী সঞ্জীব দাঁ জানান, লজ ও হোটেলগুলি থেকে কী হারে কর নেওয়া হবে, তা প্রতি পাঁচ বছর অন্তর ঠিক করে রাজ্য ভ্যালুয়েশন বোর্ড। সেই মতো বোলপুর পুরসভা প্রতি বছরে সেই কর আদায় করে। ২০১৫ সালে ভ্যালুয়েশন বোর্ড যে পরিমাণ কর নির্ধারণ করেছে, তা ২০১০ সালের তুলনায় কম পক্ষে চার গুণ বেশি।
মামলার আবেদনে এ-ও বলা হয়েছে, বীরভূমে সিউড়ি ও রামপুরহাট পুরসভা এলাকাতেও বহু লজ ও হোটেল রয়েছে। কিন্তু সেখানে এই পরিমাণ কর নেওয়া হয় না। একই জেলায় করের এত তারতম্য কেন, সেই প্রশ্নও তোলা হয়েছে মামলার আবেদনে। মামলায় যুক্ত করা হয়েছে, বোলপুর পুরসভা, রাজ্য ভ্যালুয়েশন বোর্ড, রাজ্যের পুর ও নগর উন্নয়ন দফতরকেও।
বোলপুর-শান্তিনিকেতন লজ ও হোটেল মালিক কল্যাণ সমিতির সম্পাদক প্রসেনজিৎ চৌধুরী জানান, বোলপুর পুর এলাকায় কমবেশি ১০০টি নথিভুক্ত লজ ও হোটেল রয়েছে। বার্ষিক করের পরিমাণ চার গুণ বেড়ে যাওয়ায় তাঁরা পুর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। প্রসেনজিৎবাবুর দাবি, পুর কর্তৃপক্ষ তাঁদের জানান, রাজ্য ভ্যালুয়েশন বোর্ড জানিয়ে দিয়েছে, করের পরিমাণ পুনরায় খতিয়ে দেখার সুযোগ কম। তাই এই মামলা।
প্রসেনজিৎবাবুদের মতো অনেকেরই দাবি, ‘‘শান্তিনিকেতন-বোলপুর আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র হলেও, সারা বছর এত পর্যটকও আসেন না যে, চার গুণ কর দিয়েও মালিকদের আর্থিক ক্ষতি হবে না। হোটেল বা লজের করের মূল্যায়ন প্রতি পাঁচ বছরে দশ, পনেরো এমনকী কুড়ি শতাংশ হারে বাড়ানো হলেও কিছু বলার ছিল না। কিন্তু এক ধাক্কায় এত বেশি কর অনেকের পক্ষেই দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’’
হোটেল মালিকদের আশঙ্কা, নতুন হারে কর না মেটালে হোটেল বা লজের লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ করবে না বোলপুর পুরসভা। তাতে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। বোলপুরের পুরপ্রধান সুশান্ত ভকতের সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি। তবে, উপপুরপ্রধান তথা বিধায়ক নরেশ বাউড়ির বক্তব্য, ‘‘এ ক্ষেত্রে আমাদের কোনও ভূমিকা নেই। ভ্যালুয়েশন বোর্ড যে পরিমাণ নির্ধারণ করেছে, সেই অনুযায়ীই আমরা কর চেয়েছি।’’