প্রতীকী ছবি।
মাথার উপর পাকা ছাদ নেই। অথচ আর্থ সামাজিক ও জাতিগত সমীক্ষায় নাম না-থাকার জন্য যাঁরা কেন্দ্রের প্রধানমন্ত্রী আবাস বা রাজ্যের বাংলা আবাস যোজনায় বাড়ি পাননি, বিধানসভা নির্বাচনের মুখে তাঁদের জন্য সুখবর এসেছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ‘আবাস প্লাস’ তালিকায় জেলা জুড়ে এমন লক্ষাধিক বঞ্চিত উপভোক্তার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বীরভূম জেলা পরিষদের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের পাঠানো সেই তালিকা ইতিমধ্যেই ব্লক ধরে ধরে পাঠানো হয়েছে। তালিকায় থাকা যাঁরা যোগ্য, তাঁদের আধার ও জবকার্ড ‘ম্যাপিং’ করে রেজিস্ট্রেশনের কাজ চলছে। ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সেই কাজ সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে। ব্লক পিছু এই সংখ্যা কোথায় ৮ হাজার, কোথাও ১৬ হাজার।
প্রশাসন সূত্রে খবর, আর্থ সামাজিক ও জাতিগত সমীক্ষা অনুযায়ী তালিকাভুক্তদের বাড়ি দেওয়ার কাজ প্রায় শেষের পথে। তার পরের ধাপেই ‘আবাস প্লাস’ তালিকভুক্তদের সুযোগ আসবে। যা স্বস্তি দিচ্ছে শাসকদলকেও। কারণ, পাকা বাড়ি না-থাকা সত্ত্বেও কেন বাড়ি তাঁরা পাননি, গ্রামবাসীদের এই প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে ক্লান্ত হয়েছেন পঞ্চায়েত সদস্য থেকে বিধায়ক, সকলেই। প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে আর্থ সামাজিক ও জাতিগত সমীক্ষা অনুয়ায়ী যে সকল পরিবারের পাকা বাড়ি নেই সেগুলিকে চিহ্নিত করা হয়েছিল। সেই তালিকা ধরেই কেন্দ্র ও রাজ্যের অংশীদারিত্বে এই প্রকল্প রূপায়ণে প্রতি বছর গ্রামীণ এলাকায় ১ কোটি বাড়ি তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়। চিহ্নিত উপভোক্তাদের তিনটি কিস্তিতে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। কেন্দ্র দেয় ৬০ শতাংশ, রাজ্য ৪০ শতাংশ। এ ছাড়াও উপভোক্তা পান ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে ৯০ দিনের মজুরি। এ যাবত জেলা জুড়ে কয়েক লক্ষ কাঁচা বাড়ি পাকা হয়েছে। চলতি অর্থবর্ষে অনুমোদন পেয়েছে লক্ষাধিক বাড়ি। এখন পূর্বের ওই তালিকা প্রায় শেষের পথে।
সমস্যা হল, ২০১১ সালে হওয়া ওই সমীক্ষায় বাদ গিয়েছেন এমন অনেকেই, যাঁদের আজও পাকা বাড়ি নেই। কী ভাবে ওই সব পরিবার বাদ গেল, তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। কিন্তু, এর ফলে প্রশাসনের কর্তা থেকে জনপ্রতিনিধিদের নানা অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছিল। সেই বাদ পড়া উপভোক্তাদের সমস্যা মেটাতেই বছর দুই আগে ফের একটি সমীক্ষা হয়।
জেলা পরিষদ সূত্রে খবর, সে দফায় মোট ২ লক্ষ ৮০জনের তালিকা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের ‘আবাস প্লাস’ তালিকা প্রকাশ করার সময় দেখা যায় সেখান থেকেও বাদ গিয়েছে অর্ধেক নাম। এ বার যে নামগুলি রয়েছে, তাঁদের কেউ সরকারি আবাস যোজনায় বাড়ি পেয়েছেন কি না বা তাঁদের আদৌও পাকাবাড়ি আছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।
প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশ বলছেন, ২০২২ সালের মধ্যে সকলের জন্য বাড়ি করার ঘোষণা হয়েছে। ‘আবাস প্লাস’ তারই অঙ্গ। খয়রাশোলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শ্যামল গায়েন বলেন, ‘‘ব্লক জুড়ে আবাস প্লাস তালিকায় কয়েক হাজার নাম রয়েছে। কিন্তু, এমন তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে, যেখানকার খুব কম সংখ্যক বাড়ি প্রাপকদের নাম রয়েছে।’’