puruilia
বাংলার আবাস যোজনা প্রকল্পে আরও সাড়ে তেরো হাজার বাড়ি পেল পুরুলিয়া।
এই প্রকল্পে গত নভেম্বরে বিশেষ সপ্তাহ উদযাপন হয়েছে। তখন এক সঙ্গে ৫০,২২২টি বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল। পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার জানান, আরও ১৩,৫৫৬টি বাড়ি বরাদ্দ হয়েছে। বিভিন্ন ব্লকের মধ্যে তা ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই নির্মাণকাজও শুরু হয়ে যাবে।
প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, এক সপ্তাহে এতগুলি বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করায় পুরুলিয়া জেলার জন্য সব থেকে বেশি বাড়ির বরাদ্দ করেছে রাজ্য। জেলাশাসক জানান, প্রাপকের অ্যাকাউন্টে বাড়ি তৈরির টাকা ঢোকে। অনেক সময়ে অন্য দরকারে সেই টাকা খরচ করে ফেলেন কেউ কেউ। টাকা আসার সঙ্গে সঙ্গে তাই কাজ শুরু করে দিতে চেয়েছিল জেলা প্রশাসন। সেই সূত্রেই এক সঙ্গে বাড়িগুলি তৈরির ভাবনা।
গত তিন বছরে আবাস যোজনায় পুরুলিয়া জেলায় তৈরি হয়েছে ৬৯,৫৮১টি বাড়ি। কিন্তু বাড়ি করিয়ে দেওয়ার জন্য ‘কাটামানি’ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাসকদলের নেতা-কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের মতে, গত লোকসভা ভোটে সেই ক্ষোভের প্রভাব পড়েছে। ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে গ্রামেগঞ্জে গিয়ে অনেক নেতাই ‘কাটমানি’ নিয়ে অভিযোগ শুনেছেন।
গত নভেম্বরে ‘আবাস যোজনা সপ্তাহ’ উদযাপনের শুরুটাই হয়েছিল শপথ পাঠ দিয়ে। প্রাপকেরা শপথ নিয়েছিলেন, বাড়ি তৈরির জন্য কাউকে অনৈতিক ভাবে টাকা দেবেন না। তেমন পরিস্থিতি হলে সোজা অভিযোগ জানাবেন বিডিও-র কাছে। পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বলা হয়েছিল, অভিযোগ প্রমাণিত হলে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হবে। তবে গত নভেম্বরে এই মর্মে কোনও অভিযোগই ওঠেনি।’’
তবে কটাক্ষ করছেন বিরোধীরা। সিপিএমের জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায় বলেন, ‘‘সপ্তাহ উদযাপনের মাধ্যমে এক সঙ্গে বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করা, শপথবাক্য পাঠ করানো—সবই নাটক।’’ জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতোর বক্তব্য, ‘‘অভিযোগ দায়ের হয়নি। কিন্তু কাটমানির লেনদেন যে নিচুতলায় চলছে না, এমন নয়। প্রকাশ্যে সাহস করে কেউ বলছেন না।’’ আর বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকারও টাকা দেয়। ২০২২ সালের মধ্যে সকলের মাথার উপরে ছাদ হবে বলে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন। রাজ্য সরকারকে তো কাজ করতে হবে। এর মধ্যে বিরাট কৃতিত্বের কিছু নেই।’’