সাঁওতালডিহি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। ছবি: সঙ্গীত নাগ।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে দেশে দ্বিতীয় নয়, পেতে হবে শীর্ষ স্থান। শুক্রবার সাঁওতালডিহি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে এসে বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মী ও আধিকারিকদের জন্য এই লক্ষ্য বেঁধে দিলেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। মন্ত্রী বলেন, “সাঁওতালডিহি রাজ্যকে পথ দেখিয়েছে। এখন সাঁওতালডিহি দেশের মধ্যে দ্বিতীয়। কিন্তু এখানেই থেমে থাকলে চলবে না। প্রথম হতে হবে।”
মঞ্চে উপস্থিত ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার অলোক ঘোষ বলেন, “গত বছরে আমরা দেশের মধ্যে দ্বিতীয় হয়েছি। তার আগে পঞ্চম স্থান পেয়েছিলাম। বিদ্যুৎমন্ত্রী এ দিন লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে দিয়েছেন। আমাদের আরও সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।” ‘পিডিসিএল’-এর সিএমডি পিবি সেলিমও জানান, শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদনের নিরিখে নয়, বিদ্যুৎ উৎপাদনে কম খরচ কমিয়েও নজির গড়েছে সাঁওতালডিহি।
যদিও স্থানীয় পাড়ার বিজেপি বিধায়ক নদীয়ারচাঁদ বাউরি-সহ শাসক দলেরই দুই পঞ্চায়েত সমিতি, রঘুনাথপুর ২ ও পাড়ার সভাপতিদের অনুষ্ঠানে ডাক না পাওয়া ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনায় ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভও জানিয়েছেন তাঁরা।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের আবাসন পড়ে পাড়া ব্লক এলাকায়। পাড়া পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের সভাপতি দীপক কুম্ভকার বলেন, “বিদ্যুৎকেন্দ্রের নানা স্থানীয় সমস্যা আমাদেরই সামলাতে হয়। উন্নয়নের প্রশ্নে আমরা বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা করে চলি। অথচ কেন্দ্রের সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানেই আমরা ডাক পেলাম না। এটা কাঙ্ক্ষিত ছিল না।”
তাঁর আরও অভিযোগ, অতীতে ‘সিএসআর’ প্রকল্পে পাড়া ব্লক এলাকার নানা উন্নয়নমূলক কাজে বিদ্যুৎকেন্দ্র আর্থিক সহায়তা করত। এখন তা-ও বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
ওই পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি গৌরাঙ্গ বাউরিও বলেন, “আমাদের এলাকায় বিদ্যুৎকেন্দ্র। অথচ আমাদেরই লোকমুখে কেন্দ্রের পঞ্চাশ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানের খবর জানতে হচ্ছে। এই ঘটনায় আমরা সকলে মর্মাহত।” পাড়ার বিধায়কের কথায়, “বিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রীবৃদ্ধি ঘটুক, আমরাও চাই। কিন্তু সুবর্ণজয়ন্তী পূর্তিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ডাকা হল না, এটা মানা যায় না।”
যদিও এলাকার মানুষজন তাঁদের সঙ্গে আছেন বলেই এত ভাল কাজ করা যাচ্ছে জানিয়ে বিদ্যুৎমন্ত্রী বলেন, “সকলকে নিয়েই আমাদের সংসার। আমরা কাউকেই বাদ দিইনি। অনেকে হয়তো আসতে পারেননি।” ‘সিএসআর’ প্রকল্প ঘিরে ওঠা অভিযোগ নিয়ে তাঁর বক্তব্য, “ওই ফান্ড থেকে অনেক কাজই করা হচ্ছে। সভাধিপতি, মন্ত্রীর সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনাও হয়েছে। আমাদের তরফ থেকে যতটা করার আমরা নিশ্চয় করব।”
এ দিন সাঁওতালডিহিতে গোল্ডেন জুবিলি পার্ক, পঞ্চাশ বছর পূর্তির লোগো, শিমূল বীথি নামের নতুন অতিথিশালা, সুইমিং পুল, সভাগৃহের উদ্বোধন করেন মন্ত্রী।
ছিলেন মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু, জেলা পরিষদের সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাতো, অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) উজ্জ্বল সেনগুপ্ত, রঘুনাথপুরের এসডিও তামিল ওভিয়া এস-সহ পিডিসিএলের শীর্ষ আধিকারিকেরা।