প্রতীকী ছবি।
পেট্রোল, ডিজেল, রান্নার গ্যাসের দাম বাড়ার বিরাম নেই। দোসর হয়েছে ভোজ্য তেল থেকে শুরু করে ওষুধ-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সমস্ত জিনিস। সব কিছুর দাম এতটাই বেড়েছে যে নুন আনতে পান্তা ফুরনোর অবস্থা মধ্যবিত্ত থেকে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে।
গত কয়েক মাসে ক্রমেই বেড়েছে সংসারে লাগে এমন সব জিনিসের দাম। তার উপর সম্প্রতি ওষুধের দামও বৃদ্ধি হয়েছে। ফলে খরচ কমাতে নানা ক্ষেত্রে বাজেট কমাতে হচ্ছে সব বাড়িতেই। শখ আহ্লাদের কথা ভুলে গিয়ে কেবল পেট চালানোর কথাই ভাবতে হবে, এমনই বলছে আমজনতা। সিউড়ি শহরের এক সোনার দোকানী মাসিক আয় ২৫ হাজার টাকা। তাঁর পরিবারে সদস্য সংখ্যা পাঁচ। তাঁর পরিবারে মায়ের ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্ত চাপের রোগী আছেন। তাঁর জন্য প্রতি মাসে ওষুধের খরচ হয় প্রায় আড়াই হাজার টাকা। সব মিলিয়ে আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ বাড়ির খরচেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘যে হারে খরচ বাড়ছে তা সামাল দিতে বাজেটে একাধিক পরিবর্তন আনতে হয়েছে। যেমন, আগে সপ্তাহে ছ’দিন মাছ, মাংস বা ডিম হত। তা এখন পরিবর্তন করতে হয়েছে। মাসে হয়তো তিন বার করে মাংস আনা হবে।’’
একই বক্তব্য সিউড়ি শহরের আরও দুই বাসিন্দার। তাঁদের এক জন একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। তাঁর মাসে আয় ১০ হাজার টাকা। তাঁর পরিবারের সদস্য সংখ্যা চার জন। মেয়ে শারীরিক ভাবে অসুস্থ। অ্যাংজাইটির সমস্যা থাকায় তাঁর হাত পা কাঁপা, শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা হয়। স্ত্রীর সম্প্রতি অপারেশন হওয়ায় নিয়মিত ওষুধ লাগে। তিনি বলছেন, ‘‘সংসার খরচ বাদেও মাসে ১২০০ টাকার ওষুধ লাগে। যে হারে দাম বাড়ছে তাতে কীভাবে চলবে জানি না। যা অবস্থা তাতে মুখের স্বাদ পরিবর্তন বা কোথাও ঘুরতে যাওয়ার কথা ভুলে গিয়েছি। কোনও মতে পেট চালাতে পারলে হয়।’’
আগুন দামের জন্য পোস্ত খাওয়া বন্ধই হয়ে গিয়েছে প্রায় সব পরিবারে। সিউড়ি শহরের আরেক বাসিন্দা, পেশায় ব্যাঙ্ককর্মী বলছেন, ‘‘আমার নিজের ওষুধ লাগে মাসে প্রায় আড়াই হাজার টাকার। যে হারে দাম বাড়ছে তাতে বাজেটে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। কীভাবে কী হবে জানি না।’’ সিউড়ি শহরের ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক কিসান পাল বলেন, ‘‘যে হারে দাম বাড়ছে তাতে আমাদের কেনাবেচা কমে গিয়েছে। ফলে আমাদেরও আয় কমেছে। আর সাধারণ ক্রেতাদের তো ভয়ঙ্কর অবস্থা!’’