রাতে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে বড়জোড়া সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। প্রতীকী চিত্র।
এক শ্রমিকের অপমৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম সুজিত শিকদার (২৬)। বাড়ি নদিয়ার কৃষ্ণনগরের বসন্তনগরে। বড়জোড়ার ঘুটগড়িয়ার একটি ইস্পাত কারখানায় কাজ করতেন তিনি। বুধবার রাতে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে বড়জোড়া সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। আরও তিন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে বাঁকুড়া মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট মিললে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সুজিতের জামাইবাবু অপূর্ব দাস জানান, গত প্রায় ১১ মাস ধরে ঘুটগড়িয়ার ওই ইস্পাত কারখানায় কাজ করছিলেন সুজিত। থাকতেন কারখানা সংলগ্ন মেসে। মঙ্গলবার শেষ পরিবারের সঙ্গে ভিডিয়ো কলে কথা বলেন তিনি। কোনও অসুস্থতা চোখে পড়েনি। বুধবার ছিল সুজিতের জন্মদিন। তবে সকাল থেকে বার বার ফোন করেও কোনও জবাব মেলেনি। সন্ধ্যায় সুজিতের সহকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁর অসুস্থতার কথা জানা যায়। তিনি বলেন, “রাত ১০টা নাগাদ ওঁর মৃত্যুর খবর পাই। জন্মদিনেই চলে গেল। এক জন সুস্থ, সবল তরতাজা যুবক কী ভাবে মারা যেতে পারে, বুঝতে পারছি না। আমরা চাই প্রকৃত সত্য সামনে আসুক।” সুজিতের বাড়িতে তাঁর অসুস্থ বৃদ্ধ বাবা-মা ও বোন রয়েছেন বলে জানান তিনি।
এ দিকে, অসুস্থ অন্য তিন শ্রমিক, পার্থ দত্ত, সুভাষ মণ্ডল ও ভাগ্যধর মণ্ডল বাঁকুড়া মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পার্থের বাড়ি গঙ্গাজলঘাটির কেন্দুয়াডিহিতে। সুভাষ মেজিয়ার পালাজুড়িয়া ও ভাগ্যধর সীতারামপুরের বাসিন্দা। এ দিন হাসপাতালে শুয়ে পার্থ বলেন, “সুজিতের সঙ্গে আমরা এক ঘরেই থাকতাম। মঙ্গলবার অন্য খাবারের সঙ্গে সুজিতের কিনে আনা তরমুজ খেয়েছিলাম। তার পরে, সে দিন সন্ধ্যা থেকে সকলের পেট ব্যথা, বমি শুরু হয়। দোকান থেকে ওষুধ কিনে খেয়েছিলাম। পরে, সেই রাতে আমরা তিন জন বাড়ি ফিরি। সমস্যা না কমায় বুধবার অমরকানন প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হই। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার আমাদের বাঁকুড়া মেডিক্যালে স্থানান্তরিত করা হয়।” হাসপাতালে গিয়েছিলেন বড়জোড়ার বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে আনার সময়ে মৃত্যু হয় ওই শ্রমিকের। আমরা মৃত শ্রমিকের পরিবারের পাশে রয়েছি।” বিজেপির শ্রমিক নেতা গোবিন্দ ঘোষের তবে অভিযোগ, ওই শ্রমিক কর্মরত অবস্থায় অসুস্থ না হলেও এ ক্ষেত্রে কারখানা কর্তৃপক্ষের গাফিলতি রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।