নবপদে: মানিক মিত্র। নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে, বাঁকুড়ায় সাংগঠনিক স্তরে রদবদল ঘটিয়ে ‘পুরনো’ মুখে ভরসা রাখল তৃণমূল। সোমবার রাজ্য তৃণমূলের তরফে জেলাগুলির সাংগঠনিক পদাধিকারীদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেখানে বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান পদে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরাকে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে খাতড়ার বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা মানিক মিত্রকে। বাঁকুড়ার জেলা সভাপতি, বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা এবং পুরুলিয়ায় কোনও রদবদল হয়নি।
মানিকের প্রতিক্রিয়া, “সবাইকে এককাট্টা করে পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলকে জেতাতে হবে। দলের বিরুদ্ধে যে কুৎসা, অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, তার মোকাবিলা করতে হবে। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সেই কাজ করব।”
এর আগে, জেলা সফরে এসে বারবার দলের পুরনো কর্মীদের সম্মান দিতে, তাঁদের ‘সক্রিয়’ করতে নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় নেতাদের কাছে মানিকের খোঁজ নিতেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। তৃণমূলের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দলের সঙ্গে থাকা মানিক বাম আমলে জেলাস্তরেও সংগঠন গড়ে তুলতে কাজ করেছেন। মাঝে দলীয় কাজে তিনি ‘নিষ্ক্রিয়’ হয়ে পড়েন বলে দলের একাংশের তরফে দাবি উঠলেও এ দিন মানিক বলেন, “নিষ্ক্রিয় হইনি। মাঝে আমার পরিবারের উপর দিয়ে অনেক ঝড়ঝাপটা গিয়েছে। সেই সব কাটিয়ে উঠেছি।” এ দিন তাঁকে সংবর্ধনা জানায় দলের খাতড়া ব্লক কমিটি।
শ্যামলকে দায়িত্ব থেকে সরানো নিয়েও চর্চা চলছে। সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতির কটাক্ষ, “রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি ফাঁস হওয়ার পরে, অনেকের সঙ্গে হয়তো তৃণমূল এখন দূরত্ব বাড়াতে চাইছে।” তবে শ্যামলের দাবি, “আমি নিয়ম-বিরুদ্ধ কাজ কখনও করিনি। কেন পদ থেকে সরানো হল দলই বলতে পারবে। দলের নিয়মনীতি মেনে কাজ করেছি। আগামী দিনেও করব।” দল যে দায়িত্ব দিয়েছে, তা পালন করবেন, জানান তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দিব্যেন্দু সিংহ মহাপাত্র ও বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অলক মুখোপাধ্যায়ও।
পাশের জেলা পুরুলিয়ায় অবশ্য কোনও সাংগঠনিক রদবদল করেনি তৃণমূল। সৌমেন বেলথরিয়াকেই ফের জেলা সভাপতি পদে বহাল রাখা হয়েছে। জেলা চেয়ারম্যান পদেও কোনও বদল হয়নি। রয়ে গিয়েছেন বর্ষীয়ান নেতা হংসেশ্বর মাহাতো। গত বছর অগস্টে গুরুপদ টুডুর পরিবর্তে দায়িত্ব পান সৌমেন। তারপর তিনটি পুরসভাতেই দল জিতেছে। এ দিন সৌমেনও বলেন, “মানুষ সঙ্গে আছেন। দলও ফের দায়িত্ব দিয়েছে। সবাইকে নিয়েই চলতে চাই।”